Clay Artist

Clay artists: মাটি অমিল, সমস্যায় চন্দননগরের মৃৎশিল্পীরা

মাটি সরবরাহকারীদের দাবি, লরিতে মাটি সরবরাহের প্রশাসনিক অনুমতি মিলছে না। তাতেই সমস্যা।

Advertisement

কেদারনাথ ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৬
Share:

অসমাপ্ত: কাঠামো পড়ে। নিজস্ব চিত্র।

মাটি মিলছে না। খড় বাঁধা অবস্থায় মা দুর্গার কাঠামো পড়ে রয়েছে। চন্দননগরের কুমোরপাড়ায় মৃৎশিল্পীদের কাজকর্ম মাটি হওয়ার জোগাড়।

Advertisement

মাটির অভাবে কয়েক মাস ধরে ভুগতে হচ্ছে ওই মৃৎশিল্পীদের। জেলা প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। মাটি সরবরাহকারীদের দাবি, লরিতে মাটি সরবরাহের প্রশাসনিক অনুমতি মিলছে না। তাতেই সমস্যা।

বিষয়টি অনুসন্ধান করে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ভূমি দফতরের আধিকারিকরা। জেলা ভূমি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেন এই অবস্থা, শিল্পীরা কেন মাটি পাচ্ছেন না, খোঁজ নিয়ে দেখছি। সব দেখে সমাধান করা হবে।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, চন্দননগরের ১৫, ১৯ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাজার পাঁচেক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে শতাধিক কারখানা রয়েছে। এখানে প্রতিমা, টব, গামলা, পাতকুয়োর পাড় তৈরি হয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে মাটির জিনিস ব্যবহারের প্রবণতা কমলেও এখানকার পাতকুয়োর পাড়, ফুলের টবের ভালই চাহিদা রয়েছে। টব যায় ভিন্‌ রাজ্যেও। কিন্তু সুদিন এখন নেই।

শিল্পীরা জানান, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মাটি সরবরাহকারীরা মাটি দিচ্ছেন না। ফলে, কারবার লাটে উঠতে বসেছে। অধিকাংশ কারখানায় কাজ বন্ধ। সামনে দুর্গাপুজো। অথচ, মাটির অভাবে খড় বাঁধা অবস্থায় প্রতিমার কাঠামো পড়ে রয়েছে। এই অবস্থায় কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন অনেকে। ডুপ্লেক্স পট্টির মৃৎশিল্পী শ্রীকান্ত পাল ও সিধু পালের বক্তব্য, ‘‘আমাদের পেশায় মাটিই সব। সেই মাটিই পাচ্ছি না। বাপ-ঠাকুর্দার পেশা কি বন্ধ করে দিতে হবে? অন্য কোনও কাজ জানি না। কী হবে, কে জানে!’’ অসিত পাল মূলত প্রতিমা গড়েন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিমার খড়ে মাটি ধরাতে পারছি না। খদ্দেরকে ঠাকুর দেব কী করে, সেটাই মস্ত চিন্তা। প্রশাসন দেখুক।’’

মৃৎশিল্পীদের সংগঠন ‘চন্দননগর পটার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর অধীনে ৭৫টি পাতকুয়োর পাড় ও ৩৫টি প্রতিমা তৈরির কারখানা রয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক অসীমকুমার রক্ষিত বলেন, ‘‘মাটির অভাবে কাজ বন্ধ। রুটিরুজিতে টান পড়েছে। সমস্যার কথা জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু, সমাধান হয়নি।’’

মাটি সরবরাহকারী জয়ন্ত সামন্ত, গৌড় কুণ্ডু, বাদল অধিকারীরা জানান, সরকারকে রাজস্ব দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে তাঁরা মূলত পোলবা-দাদুপুর ব্লক থেকে মাটি এনে মৃৎশিল্পীদের কারখানায় পাঠান। কিন্তু, গত বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকে পুলিশের তরফে মাটির ট্রাক চলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁরা বলেন, ‘‘বহু বছর ধরে সরকারি বিধি মেনে এই কাজ করছি। এই অবস্থা আগে হয়নি। কয়েক মাস ধরে প্রশাসনের দুয়ারে ঘুরে হয়রান হয়ে গিয়েছি। কারবারের অনুমতি মেলেনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement