সুবীর নাগকে খোঁচা দিলীপ ঘোষের। — ফাইল চিত্র
পুরভোটের মুখে বিজেপি-তে থামছে না দলের ‘বিদ্রোহী’দের নিয়ে ডামাডোল। উত্তর ২৪ পরগনা, বাঁকুড়ায় দলের নবগঠিত রাজ্য কমিটি নিয়ে শোরগোলের জের রয়েছে এখনও। এই আবহে কপালে ভাঁজ ফেলল বিজেপি-র হুগলি জেলার প্রাক্তন সভাপতি সুবীর নাগকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক।
শনিবার চুঁচুড়ায় একটি ক্লাবের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। তাঁদের সঙ্গে দেখা যায় সুবীরকে। তাঁকে সংবর্ধনাও দেন অপরূপা। আর তা নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। রবিবার হুগলির চন্দননগরে গিয়ে ওই বিতর্ক আরও উসকে দিয়েছেন বিজেপি-রই সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলীয় বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন সুবীর। সেই প্রসঙ্গে নাম না করে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘জানি না আমি কেন জানেন না উনি। সবাইকে সব খবর দেওয়া হয়। উনি তো প্রদেশের নেতা। ওঁরও জানার দায়িত্ব আছে।’’ সুবীরের তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে দিলীপের ব্যাখ্যা, ‘‘আমন্ত্রণ করার অপেক্ষা করছেন কেন? ওঁকে নিচ্ছে না কারণ দাম কমে গিয়েছে। যাঁরা এমন বলেন তাঁদের বাজারে কোনও দাম নেই।’’ দিলীপের কথায়, ‘‘কথাবার্তা সম্মানের সঙ্গে বলা উচিত। যিনি যে স্তরের নেতা তাঁর কথাবার্তা তেমনই হওয়া উচিত। কেউ গরু-বাছুর নয় যে বেঁধে রেখে দেব। লোকে দলে থাকেন আদর্শের টানে।’’
দিলীপের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ সুবীর। তাঁর কথায়, ‘‘দিলীপ’দা প্রবীণ নেতা। ওঁর মতো এক জন নেতার থেকে আমরা প্রেরণা পেয়েছি। আবার শিখেওছি। তবে এটাও বলব আমরা যেমন নেতাদের সমীহ করি, তেমনই নেতাদেরও উচিত কর্মীদের সমীহ করা। উনি যদি আমাকে গরুছাগলের সঙ্গে তুলনা করেন, তা হলে এটা বুঝতে হবে দলে আমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। দিলীপ’দা একক ভাবে আমার সঙ্গে বসেছেন। আমার কথা শুনেছেন। তার পরেও তিনি কার প্ররোচনায় এমন উক্তি করলেন জানি না।’’ সুবীরের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘দিলীপ’দার মুখেও শুনেছি, ‘কর্মীরা চলে গেলে কিছু যায় আসে না।’ আমার দিলীপ’দাকে প্রশ্ন, সিঙ্গুর এবং সপ্তগ্রামে যাঁরা বিজেপি-র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাঁরা কোন যোগ্যতায় প্রার্থী হলেন? হুগলির সাতটা আসন কী ভাবে চলে গেল? দিলীপ’দাও তো নিজেই কয়েক দিন আগে ফিরহাদ হাকিমের ঘরে গিয়েছিলেন সৌজন্য দেখিয়ে। রাজনীতিতে সৌজন্য থাকবে না? তখন তো এই প্রশ্ন ওঠেনি?’’
সুবীরের আরও বক্তব্য, ‘‘দল আমাকে বহিষ্কার করতেই পারে। সকলকেই করছে। ঠগ বাছতে বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। নেতারা কান দিয়ে দেখছেন। নিচুতলা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। নেতৃত্বের অপদার্থতার জন্য সাতটি বিধানসভায় হেরেছি। অপদার্থরাই আবার হুগলি সামলাচ্ছে। কারও ইগোকে রাখতে গেলে অচিরেই দলটা সাইনবোর্ডে পরিণত হবে।’’