মৃত যুবকের বাড়ির আশপাশে মশার লার্ভার খোঁজ। শনিবার, ইছাপুরে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
হাওড়ায় ডেঙ্গি ক্রমাগত বাড়ছে। গত এক মাস ধরে উত্তর হাওড়ার তিনটি ওয়ার্ডের পরে সংযুক্ত ওয়ার্ড বলে পরিচিত, ৪৫ থেকে ৫০ নম্বরে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে গত ১৫ অগস্ট হাওড়া পুরসভার ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইছাপুর শিয়ালডাঙা এলাকার বাসিন্দা, মিলন রিত নামে ২২ বছরের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই এলাকার আরও কয়েক জন বাসিন্দা আক্রান্ত হয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। শনিবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী। পরে স্বাস্থ্য বিভাগ, সাফাই বিভাগের অধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে আক্রান্ত এলাকায় নিয়মিত সাফাই-সহ লার্ভিসাইড তেল স্প্রে, ব্লিচিং দেওয়ার উপরে জোর দেন তিনি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ অগস্ট জ্বরের উপসর্গ নিয়ে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন মিলন। এর পরে ১৫ অগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি বলেই ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ১৫ দিন ধরে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে বহু মানুষেরই জ্বর হচ্ছে। একই পরিবারের তিন জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, তেমনও ঘটেছে। অথচ আগে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কাউকে দেখা যায়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
নির্মল দাস নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওই যুবকের মৃত্যুর পরের দিন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন এসে এলাকায় জমা জল পরিষ্কার থেকে শুরু করে লার্ভিসাইড স্প্রে করা শুরু করেন। তার আগে তাঁদের একবারও দেখা যায়নি।’’ সীমা খান নামে শিয়ালডাঙার আর এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘পুরসভার কর্মীরা আসেন। কেমন আছেন, জিজ্ঞাসা করে চলে যান। জমা জল, আর্বজনা এ সবের দিকে দেখেন না তাঁরা।’’
বৃষ্টি শুরুর পর থেকে গত তিন সপ্তাহে ডেঙ্গির লেখচিত্র যে ঊর্ধ্বমুখী, তা মানছেন পেশায় শিশু চিকিৎসক, হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী নিজেও। তিনি বলেন, ‘‘গত তিন সপ্তাহে ডেঙ্গি বেড়েছে, এটা ঠিকই। তবে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও ২০০ জন ‘স্প্রে ম্যান’ ইতিমধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। ১৭ লক্ষ গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে নানা জলাশয়ে। ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট, ব্যানার টাঙানো হয়েছে। জেলা দফতর থেকে শুরু করে রাজ্য পুর নগরোন্নয়ন দফতর সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করছে। যে সব এলাকায় ডেঙ্গি হচ্ছে, সেখানে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’