Pradhan Mantri Awas Yojana

হেলে পড়ছে মাটির ঘর, আবাসের জন্য বিডিও-র কাছে আর্জি দিনমজুরের

২০১৮ সালে আবাস যোজনা প্রকল্পের সমীক্ষায় তাঁর নাম উঠেছিল। ভেবেছিলেন বাড়ি পাবেন। কিন্তু এ বার জানতে পেরেছেন, আবাস প্লাসের উপভোক্তা তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ গিয়েছে।

Advertisement

সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:২৮
Share:

দীপু ঘোড়ুইয়ের ঘরের বর্তমান অবস্থা। নিজস্ব চিত্র

টালির ছাউনি দেওয়া মাটির দু’কামরার ঘর একদিকে হেলে গিয়েছে। দু’বছর আগে আমপান ঝড়ে দেওয়াল ফেটে গিয়েছিল। সারানো হয়নি। বৃষ্টিতে জল ঢোকে। এর মধ্যেই স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে দিন গুজরান করতে হচ্ছে উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের জোয়ারগড়ি পঞ্চায়েতের নয়াচক পূর্বপাড়ার দিনমজুরদীপু ঘোড়ুইকে।

Advertisement

২০১৮ সালে আবাস যোজনা প্রকল্পের সমীক্ষায় তাঁর নাম উঠেছিল। ভেবেছিলেন বাড়ি পাবেন। কিন্তু এ বার জানতে পেরেছেন, আবাস প্লাসের উপভোক্তা তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ গিয়েছে। অথচ, এ বার সমীক্ষার সময় তিনি ঘরের অবস্থা আশাকর্মীকে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন বলে দাবি দীপুর। হতাশ ওই দিনমজুর বাড়ি চেয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন।

দীপু বলেন, ‘‘কখনও চাষবাস করি, কখনও কারখানায় শ্রমিকের কাজ করি। অভাবের কারণে ঘর করতে পারিনি। এ বার সমীক্ষার সময় আশা জেগেছিল। কিন্তু পঞ্চায়েতে গিয়ে শুনলাম, তালিকায় নাম নেই। তৃণমূল নেতারাও কোনও আশ্বাস দিলেন না।’’

Advertisement

সমীক্ষক আশাকর্মী বর্ণালি সিংহের দাবি, আবাস প্লাসের তালিকায় তিনি ওই ব্যক্তির নাম রেখে পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত প্রধান মানিক মাখাল বলেন, ‘‘ওই তালিকার ক্ষেত্রে প্রধানের কোনও ভূমিকা নেই। আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সরকারি আধিকারিকরা সমীক্ষা করেছেন। তাঁরাই তালিকা তৈরি করছেন।’’ ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সমীক্ষার পরে একটি খসড়া-তালিকা পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে পাঠানো হয়েছে। যাতে মানুষ বুঝতে পারেন, কাদের আবাস প্লাসে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। কারও আপত্তি থাকলে তিনি ব্লকঅফিসে অভিযোগ জানাতে পারেন। পরে সে সব তদন্ত করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হবে।’’

এ দিকে, এই তালিকা থেকে নাম বাদ পড়াকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলছে। গতবার (২০১৮) পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে জোয়ারগড়ি পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি। তাদের দাবি, তখন প্রকৃত গরিব মানুষের নাম আবাস যোজনার তালিকায় তোলা হয়েছিল। ২০২১ সালে পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল।এ বারের সমীক্ষায় শাসকদলের নেতারা আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের চাপ দিয়ে তাদের দলের লোকেদের নাম তালিকায় তুলছে এবং প্রকৃত গরিব মানুষ বাদ পড়ছেন বলে বিজেপির অভিযোগ।

বিজেপি নেতা চিরণ বেরা বলেন, ‘‘শুধু দীপু ঘোড়ুই নন, এই রকম অনেকের নাম বাদ পড়েছে। আমরা সমস্ত বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি। যদি প্রকৃত গরিব মানুষরা ঘর না পান, তা হলে বৃহত্তর আন্দোলন করব।’’

অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের পাল্টা দাবি, ওই তালিকায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের নামই আছে। তৃণমূলের কেউ নেই। পঞ্চায়েত প্রধান মানিক মাখাল বলেন, ‘‘তালিকায় যাঁদের নাম আছে, অধিকাংশই বিজেপি সমর্থক। ইচ্ছে করেই সেই সময় (২০১৮) তৃণমূল সমর্থকদের নাম রাখা হয়নি।’’ এ কথা মানেনি বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement