বন্ধ ট্রেন পরিষেবা। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত শনিবার সকালে শালিমারগামী সেকেন্দ্রাবাদ এক্সপ্রেস দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখার নলপুর স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে। এর জেরে শনিবার রাত পর্যন্ত এই বিভাগে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ফের প্রশ্ন উঠে গেল বাগনান-আমতা রেলপথের অসমাপ্ত কাজ নিয়ে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর বিভাগের অধীন বাগনান-আমতা রেলপথের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালের গোড়ায়। জমি-জটে আটকে শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে বন্ধই আছে প্রকল্পটি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, বাগনান-আমতা রেলপথের কাজটি শেষ হলে অনেক ট্রেনকে হাওড়া এবং খড়গপুর থেকে বাগনান এবং আমতা হয়ে হাওড়া পর্যন্তা নিয়ে যাওয়া যেত। তাতে পুরোপুরি না হলেও আংশিক ভাবে হাওড়া এবং খড়গপুরের মধ্যে ট্রেন চালানো যেত।
রেলমন্ত্রক সূত্রের খবর, এই কথা ভেবেই আশির দশকের গোড়ায় হাওড়া-বাগনান ভায়া আমতা রেলপথটির পরিকল্পনা করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী গনিখান চৌধুরী। উদ্দেশ্য ছিল, আন্দুল থেকে বাগনানের মধ্যে রেল দুর্ঘটনার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হাওড়া-বাগনান ভায়া আমতা রেলপথ ব্যবহার করে হাওড়া থেকে খড়গপুরের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ট্রেন চালানো যাবে। কিন্তু বাগনান-আমতা রেলপথের কাজ শেষ না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা মাঠে মারা গিয়েছে।
২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি বাগনান-আমতা রেলপথের কাজের সূচনা করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পটি সে সময়ে রেলবোর্ড অনুমোদনও করে। বরাদ্দ করা হয় ১৯৪ কোটি টাকা। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রস্তাবিত এই রেলপথে ফতেপুর ও হারোপে দু’টি হল্ট স্টেশন করার কথা হয়। জমি দরকার ছিল ১৬৮ একর। বাগনানের দিকে কিছুটা কাজ হয়। দামোদরে সেতুর জন্য আটটি স্তম্ভ করা হয়।
প্রথমে জমি অধিগ্রহণে সরাসরি নামে রেল নিজে। কিন্তু অধিগ্রহণে বেশ জটিলতা দেখা দেয়। তখন রেলের তরফ থেকে ২০১২ সালে জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া তুলে দেওয়া হয় রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে। তারপর থেকে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
রেল সূত্রের খবর, প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়নি। রাজ্য সরকার জমি দিতে না পারায় কাজ করা যাচ্ছে না। দক্ষিণ পূর্ব রেলের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের উপযোগিতা আছে। রাজ্য জমির ব্যবস্থা করলেই কাজ শুরু হবে।’’
কি বলছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর?
হাওড়া জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রের খবর, তাদের তরফ থেকে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অনুমতি আসেনি। তাই অধিগ্রহণের কাজ করা যাচ্ছে না।