প্রতীকী ছবি
উৎসবের শহরে গত কয়ের দিন ধরে কোনও রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়নি। আর তার ফলেই প্লেটলেটের চরম আকাল তৈরি হয়েছে হাওড়া জেলার সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে। হাহাকার পড়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতালেও। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, শুক্রবার ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের প্লেটলেট দেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও তা দেওয়া যায়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্লেটলেটের জন্য মানিকতলার সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে আবেদন জানানো হয়েছে। যদিও সেখানেও প্লেটলেট পাওয়া যাবে না বলে জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিলম্বে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে অুনরোধ করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতিদিন জেলা ও হাওড়া পুর এলাকা মিলিয়ে ২৪০ থেকে ২৮০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এ জন্য বর্তমানে প্রতিদিনই ২০ থেকে ৩০ ইউনিট প্লেটলেটের প্রয়োজন হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, পুজোর দিনগুলিতে দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় গত কয়েক দিনের জমা জলে ফের ডেঙ্গি বৃদ্ধি পেতে পারে। এমতাবস্থায় প্লেটলেটের আকাল পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।
হাওড়া জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ২ অক্টোবরের পর থেকে হাওড়া জেলায় আর কোনও রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়নি। শেষ শিবিরটি হয়েছিল গ্রামীণ এলাকার উদয়নারায়ণপুরে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘‘প্লেটলেট যা ছিল, তা শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত থাকলেও বর্তমানে এক ইউনিটও প্লেটলেট নেই। অবিলম্বে রক্তদান শিবিরের আয়োজন না করলে প্লেটলেটের জোগান দেওয়া সম্ভবহবে না।’’
তিনি আরও জানান, রক্তদান শিবির নিয়ে একটি সংস্থার কাছে আবেদন করা হলে তারা আগামী ১০-১১ তারিখ ওই শিবিরের আয়োজন করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু তার আগে, শুক্রবার সকাল থেকেই জেলার রক্ত বিভাজন দফতরে এক ইউনিটও প্লেটলেট নেই। ফলে ওই শিবিরের আগে, আগামী ৩-৪ দিন কী করে অবস্থা সামাল দেওয়া যাবে, সেটাই চিন্তাই রেখেছে প্রশাসনিক কর্তাদের।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন যে, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত থাকলেও প্লেটলেট নেই। ফলে আজ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক রোগীর প্লেটলেট আট হাজারে নেমে গেলেও তাঁকে প্লেটলেট দেওয়া যায়নি। মানিকতলার সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কও দিতে পারেনি। এই অবস্থায় রক্তদান শিবিরই এই সব রোগীদের বাঁচাতে পারে। তাই সমস্ত সংগঠন, ক্লাবগুলির কাছে আবেদন, উৎসবের কথা ভুলে শিবিরের আয়োজন করতে এগিয়ে আসুক। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে রক্ত দিতে চাইলেও আমরা নিতে প্রস্তুত। হাওড়া জেলা হাসপাতালে সব ব্যবস্থা আছে।’’