—ফাইল চিত্র।
হাওড়ার সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলিতে পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি রোগীদের কেমন পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, সে দিকেও এ বার থেকে নজর রাখবে প্রশাসন। রোগীদের আরও যত্ন নিতে কী কী করা উচিত, তা নিয়েও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। দৈনিক করোনা পরীক্ষার সংখ্যা তিন গুণ বাড়ানো হয়েছে বলেও দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের।
হাওড়ায় করোনার গতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলির চিকিৎসায় অব্যবস্থা নিয়ে বার বার অভিযোগ উঠে এসেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরে সেই অভিযোগ আসার পরে কয়েক জন পদস্থ কর্তাও সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন, চিকিৎসকেরা বহু ক্ষেত্রেই সংক্রমিতের শয্যার কাছে যাচ্ছেন না। ফলে রোগীরা ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই এ বার জেলা স্বাস্থ্য দফতর চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে করোনা রোগীদের প্রতি আরও কতটা যত্নশীল হওয়া যায়, সেই আলোচনা শুরু করেছেন। পাশাপাশি, জেলার দু’টি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হয়েছে এবং অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর আনানো হয়েছে।
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘যে সব হাসপাতালে কোভিড রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন, কিন্তু পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন রোগীর কাছে সরবরাহের ব্যবস্থা নেই, সেই সব জায়গায় অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর দেওয়া হয়েছে। এর জন্য বেশ কিছু কনসেন্ট্রেটর কেনা হয়েছে। রোগীর প্রতি চিকিৎসকদের আরও যত্ন নিতে বলা হয়েছে।’’
তিনি জানান, রাজ্য সরকারের চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকা মেনে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের জোগান যাতে পর্যাপ্ত থাকে, সেই ব্যবস্থাও হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বালিটিকুরির ১২০ শয্যার সেফ হোম বর্তমানে প্রায় ফাঁকা। মানুষ সেফ হোমের তুলনায় বাড়ি বা হাসপাতালেই চিকিৎসা করাতে বেশি আগ্রহী হওয়ায় রাজ্য সরকারের নির্দেশে সরকারি কোভিড হাসপাতালে ৪০ শতাংশ শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। যাঁরা বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, আগে হাওড়ায় প্রতিদিন যেখানে ৯০০ জনের কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছিল, এখন সেখানে আড়াই হাজারের বেশি পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০০টি আরটি-পিসিআর হলে অন্তত ১৭০০টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মতে, এত পরীক্ষার ফলে আক্রান্তকে চিহ্নিত করে তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেট করার কাজও বেশি করে সম্ভব হচ্ছে। এর ফলেই সংক্রমণ কিছুটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো হলে আগামী দিনে এর সুফল মিলবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
এ দিকে, হাওড়া শহরের বিভিন্ন জনবহুল জায়গা, বিশেষ করে বাজারগুলিতে দমকল দফতরের সহযোগিতায় পুরসভা গত বছরের মতো ফের জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ শুরু করেছে। এর আগে অভিযোগ উঠেছিল, টাকার অভাবে পুরসভা নিজে থেকে এই কাজ করতে পারছে না।
বিধানসভা নির্বাচনের পরে হাওড়া পুরসভার দায়িত্ব সাত সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর হাতে যাওয়ার পরেই চেয়ারপার্সন অরূপ রায়ের উদ্যোগে দমকল বুধবার থেকে জীবাণুনাশের কাজ শুরু করেছে বলে পুরসভা জানিয়েছে।