Corona

প্রতিষেধক ও অক্সিজেনের অভাবে চিন্তায় হাওড়া প্রশাসন

বেসরকারি সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে তৎপর হয়েছে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৫:২২
Share:

ছবি পিটিআই।

ক্রমশ করোনা পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে হাওড়ায়। এক দিকে, প্রতিষেধকের জোগান তলানিতে নেমে গিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক প্রতিষেধক প্রদান কেন্দ্র। সেই সঙ্গে অক্সিজেনের ভাঁড়ার প্রায় শূন্যে পৌঁছেছে। অন্য দিকে শনিবার ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে আটশোর কাছাকাছি। আর মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা, সোমবারের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণ এক হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

Advertisement

রাজ্য সরকারের কাছে অক্সিজেন ও প্রতিষেধক দ্রুত পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে তৎপর হয়েছে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

এই জেলায় এখন মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়া শহরে এই মুহূর্তে বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে ৩০০ শয্যা চালু করা গিয়েছে। যার সবগুলিই ভর্তি হয়ে রয়েছে। অন্য দিকে, সত্যবালা আই ডি-তে শয্যা ভর্তি। শুধু কিছু শয্যা খালি রয়েছে টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে। এই হল সরকারি হাসপাতালগুলির চিত্র।

Advertisement

বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে গোলাবাড়ির আইএলএস হাসপাতালের ৩০টি এবং নারায়ণা হাসপাতালের ২৮টি শয্যা সরকারি ভাবে পাওয়া গিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, রোগী ভর্তির থেকেও এখন বড় সমস্যা হচ্ছে অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে। কারণ হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অক্সিজেনের ঘাটতির জন্য চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে।

হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘অক্সিজেনের ভাঁড়ার প্রায় ফাঁকা। এই মুহূর্তে সেই জোগান না বাড়ালে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নেবে। কারণ সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলির অধিকাংশ সিসিইউ, এসডিইউ শয্যায় ইতিমধ্যেই রোগী ভর্তি রয়েছে। তাঁদের প্রতিনিয়ত অক্সিজেন লাগছে।’’ ওই কর্তা জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর দু’টি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে। তবে এখনও সেখান থেকে অক্সিজেন পাওয়া যায়নি।

কোভিড প্রতিষেধকের জোগান নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। গত মাসে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য গোটা হাওড়ায় ১৯০টি কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল। এক সপ্তাহ ধরে প্রতিষেধক কম আসায় ১৪০টি কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৪০-৫০টি কেন্দ্র চালু রাখার চেষ্টা চলছে। হাওড়া পুর এলাকায় প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য যে ১৫টি পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল, প্রতিষেধকের অভাবে শনিবার থেকে তার মধ্যে ন’টি কেন্দ্র নোটিস দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, তাই কেন্দ্রগুলিতে সেই নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যেগুলি খোলা, সেখানে প্রতিষেধক নেওয়া এবং কোভিড পরীক্ষার লম্বা লাইন পড়ছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দৈনিক যে চাহিদা, তার ২০ শতাংশ প্রতিষেধকও মিলছে না। তাই অনেক কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যেটুকু প্রতিষেধক আসছে, তার বেশির ভাগটাই শহরের জন্য পুরসভাকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ ওই কর্তা জানান, ইতিমধ্যে হাওড়া শহরে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় মিলে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এতে কিছুটা সুফল মিলেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে সংলগ্ন জেলাগুলির তুলনায় হাওড়া শহরের কোভিড পরিস্থিতি এখনও নাগালের বাইরে চলে যায়নি।

তবে চিকিৎসকদের মত, অক্সিজেন এবং প্রতিষেধকের জোগান বাড়ালে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যাও কমানো যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement