প্রতীকী ছবি।
চাহিদা ছুঁতে পারছে না জোগান। হুগলির বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় দেওয়া বন্ধ হল। আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি, শ্রীরামপুর ওয়ালশ, উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল— কোথাও শনিবার প্রথম ডোজ় মেলেনি। দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার সময় যাঁদের হয়ে গিয়েছে, তাঁদের টিকাকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে কোভিশিল্ডের প্রথমের থেকে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার ব্যবধান বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই কারণে, দ্বিতীয় ডোজ়ে চাপ কম ছিল। এখন বহু লোকের দ্বিতীয় ডোজ়ের সময় এসে গিয়েছে। একই গতিতে প্রথম ডোজ় চালিয়ে যেতে থাকলে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। কারণ, ভ্যাকসিনের জোগান বাড়েনি। তাই, আপাতত দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলায় দৈনিক গড়ে ১৩ হাজার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এত দিন কোভিশিল্ডের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের মাঝের সময়ে সুপার স্প্রেডার এবং বয়স্কদের প্রথম ডোজ় দেওয়া হচ্ছিল। এখন দ্বিতীয় ডোজ়ে প্রাধান্য দিচ্ছি।’’
হুগলিতে সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাও রয়েছে। এই অবস্থায় অনেকে যত শীঘ্র সম্ভব টিকা নিতে চাইছেন। কিন্তু ভ্যাকসিনের জোগানে ঘাটতিতে তা হচ্ছে না। প্রথম ডোজ়ের জন্য বহু মানুষ হন্যে হয়ে ঘুরছেন।
আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শুক্রবার থেকেই প্রথম ডোজ় দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তা কত দিন বন্ধ থাকবে, তা বিজ্ঞপ্তিতে নেই। এ নিয়ে শুক্রবার একদফা অশান্তির পর শনিবারেও বিক্ষোভ দেখান কিছু উপভোক্তা। গোঘাটের কুমুড়শার বছর পঁয়ত্রিশের শ্যামল মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে, প্রথম ডোজ় চালু হলে জানিয়ে দেওয়া হবে। হাসপাতালে ফোন করলে জবাব মেলে না। প্রতিদিন হাসপাতালে এসে খোঁজ নেব?’’ ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা কাটেনি জানিয়ে হাসপাতাল সুপার সত্যজিৎ সরকার বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া জরুরি। প্রথম ডোজ় কবে থেকে দেওয়া হবে, তা প্রচার করা হবে।’’
শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালেও শনিবার প্রথম ডোজ় মেলেনি। হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত সরকার জানিয়েছেন, প্রায় ৩০০ জনকে এ দিন দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়। উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেলে দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৩৫০ জন। পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভ্যাকসিন বাড়ন্ত থাকায় এ দিন টিকাকরণই হয়নি। মগরা, বলাগড় এবং পোলবা গ্রামীণ হাসপাতালে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে। এখানেও প্রথম ডোজ় মেলেনি।
তবে, কিছু জায়গায় দ্বিতীয় ডোজ়ের পাশাপাশি প্রথম ডোজ় মিলেছে। উত্তরপাড়া পুরসভার টিকাকরণ কেন্দ্রে মাত্র ৪২ জন প্রথম ডোজ় পেয়েছেন। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে শুধু দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে। তবে, এই হাসপাতালের তরফে চুঁচুড়ার মাদ্রাসা ভবনে টিকাকরণ শিবিরে প্রথম এবং দ্বিতীয়— দুই ডোজ়ই মিলেছে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার সায়রা মোড়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি হলেও উভয় ডোজ়ই দেওয়া হয়েছে। চন্দননগর পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও তাই।
বিভিন্ন পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন যেমন মিলছে, সেই অনুযায়ী টিকা দেওয়া হচ্ছে। জোগান পর্যাপ্ত থাকলে দৈনিক আরও অনেক বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব।