পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই। নোটিস বৈদ্যবাটী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ।
গত কয়েক দিন ধরে হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় ভ্যাকসিনের জোগান কম। ফলে টিকা না পেয়ে ফিরতে হচ্ছে অনেককে। এই পরিস্থিতি থেকে আপাতত মুক্তির আশ্বাস মিলল জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই ভ্যাকসিন চলে আসবে এই জেলায়।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন সরবরাহের সমস্যা আপাতত মিটে যাবে বলে আশা করছি। আপাতত দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার উপরে জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুনদেরও টিকাকরণ চলবে।’’
সম্প্রতি করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চুঁচুড়া ও চন্দননগর হাসপাতালে টিকা নেওয়ার লাইন পড়ে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত কোভ্যাক্সিন মজুত থাকায় টিকাকরণের কাজ চলছে। তবে জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন— কোনওটিই না থাকায় টিকাকরণ বন্ধ। সেখানে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন বহু মানুষ। পোলবার বাসিন্দা অজয় মণ্ডল বলেন, ‘‘করোনা বেড়ে যাওয়ায় টিকা নিতে এসেছিলাম। ভ্যাকসিন না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। কবে ভ্যাকসিন আসবে, সেই অপেক্ষায় থাকতে হবে।’’
বুধবার আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মহকুমার ১৩টি টিকাকরণ কেন্দ্রই বন্ধ ছিল। এ দিন ভ্যাকসিন একেবারেই বাড়ন্ত ছিল বলে মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অপূর্ব বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ হয়নি।
বৈদ্যবাটী শহর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (১) সপ্তাহে চার দিন ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার পর্যন্ত এই কাজ নিয়মিত চলেছে। দৈনিক তিন শতাধিক লোককে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল। তবে, শুক্রবার ভ্যাকসিন কম থাকায় আশি জনের নাম নথিভুক্ত করা হবে বলে নোটিস ঝোলান হয়। পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘ভ্যাকসিনের অভাব রয়েছে। মজুত থাকা টিকা দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন এলে ফের স্বাভাবিক গতিতে দেওয়া হবে।’’
ভ্যাকসিন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়েছে নাগরিক সংগঠন ‘অল
ইন্ডিয়া সিটিজেন্স ফোরাম’। বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে পাঠানো চিঠিতে তাদের দাবি, হুগলির বিভিন্ন জায়গায় টিকা নিতে গিয়ে বয়স্ক লোকজনকেও হয়রান হতে হচ্ছে। সংগঠনের সভাপতি শৈলেন পর্বতের অভিযোগ, সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতাল, উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, শ্রীরামপুরের মাহেশে টিকাকরণ কেন্দ্রে ভ্যাকসিন সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। ফলে, সাধারণ মানুষ ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘সবাই যাতে টিকা পান, তা নিশ্চিত করা রাজ্যের দায়িত্ব। তাই, জোগান স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা করা হোক।’’ বিষয়টি হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।