প্রতীকী ছবি।
করোনা মোকাবিলায় রাজ্য জুড়ে জনজীবনে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। হুগলিতেও প্রশাসনিক এই কড়াকড়ি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এই জেলায় করোনার হানাদারি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উল্টে সংক্রমণের হারের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও চিন্তায় রাখছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। ভাইরাসের শৃঙ্খল ভাঙতে সাধারণ মানুষকে চূড়ান্ত সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কতটা শক্তিশালী, গত বছর প্রথম পর্যায়ের সংক্রমণের রেখচিত্রের সঙ্গে তুলনাতেই পরিস্কার। গত বছর বাড়বৃদ্ধির সময়ে দৈনিক সংক্রমণ দু’শোর ঘরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এ বার তা ন’শোর ঘরে পর্যন্ত ঢুকে পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গেই বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতা। হাসপাতালে যাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই আসছেন শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে মৃত্যুর হারও বেশি। এটা চিন্তার। তবে, আমরা চেষ্টা করছি, চিকিৎসায় খামতি যাতে না থাকে। অক্সিজেনের ঘাটতি নেই। মৃত্যুর ঘটনা যথাসম্ভব কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত বহু করোনা রোগী বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকছেন। তাঁদের টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসক পরামর্শ দিচ্ছেন।
সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, হুগলিতে মোট আক্রান্ত ৪৪ হাজার ১৫৩ জন। মোট মৃত ৫৬৯ জন। অ্যাক্টিভ সংক্রমিত ৫ হাজার ৭৩০ জন। ২৪ এপ্রিল থেকে সোমবার পর্যন্ত ১০ দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ৮ হাজার ১৭ জন। অর্থাৎ এই ১০ দিনে গড়ে ৮০১.৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এই ১০ দিনে মারা গিয়েছেন ৫০ জন।
দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনা মোকাবিলা নিয়ে বিভিন্ন পুরসভার কাজ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। পুরসভা বা পঞ্চায়েতের কর্তাব্যক্তিরা দাবি করেন, নির্বাচনী বিধিনিষেধ কার্যকর থাকায় তাঁদের পক্ষে এই কাজে নানা সমস্যা হচ্ছিল। ভোট-পর্ব মিটেছে। নির্বাচনী বিধিনিষেধ উঠে গিয়েছে। তৃণমূল তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখলের পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা জানিয়েছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা উত্তরপাড়ার বিদায়ী বিধায়ক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘নির্বাচনী বিধিনিষেধের জন্য করোনা মোকাবিলার কাজে নানা অসুবিধা হচ্ছিল। এ বার আমরা করোনাকে নির্মূল করার লক্ষ্যে ঝাঁপাব। আমাদের দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে কথাই বলেছেন।’’
মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরনো বন্ধ করতে জেলা জুড়ে পুলিশি অভিযান চলছে। মাস্ক না পরলে আটক বা গ্রেফতার করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশিকায় সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত দোকান খোলার ছাড়পত্র রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে দোকান খোলা থাকছে কিনা, তা দেখতেও পুলিশি টহল চলছে। অতিরিক্ত সময় দোকান খোলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।