প্রতীকী ছবি।
প্রতিদিনই হাওড়া শহরে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবে হাওড়া পুর এলাকার শিবপুরে সংক্রমণের লেখচিত্র বেশি ঊর্ধ্বমুখী। এমনই জানাচ্ছে হাওড়া পুরসভা। এ বার তাই এলাকার বহুতল আবাসন এবং বস্তিগুলিতে জরুরি ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষার শিবির করার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে পুরসভা।
৪ এপ্রিল, রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়া জেলায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৭৪ জন। গত শনিবার এক দিনে সংক্রমিত হয়েছিলেন ১৫৭ জন। এর মধ্যে শুধু শিবপুরেই সংক্রমিত ১০০ জন! শিবপুরের মতো ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে পুরসভা ও জেলা প্রশাসন। তাই ওই এলাকায় মানুষকে সতর্ক করতে ইতিমধ্যেই মাইকিং করে কোভিড-বিধি মেনে চলতে ও প্রতিষেধক নিতে আবেদন করা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সংক্রমণ ঠেকাতে লালারস সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে ৬ এবং ১০ এপ্রিল বিধানসভা নির্বাচনে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ব্যস্ত থাকায় এখনই নতুন পরীক্ষাকেন্দ্র শুরু হচ্ছে না বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। এখন বরং হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে প্রতিষেধক প্রদানের পাশাপাশি করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক রবিবার জানান, আগের মতোই প্রত্যেক দিন জেলা জুড়ে এক হাজার বাসিন্দার করোনা পরীক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হচ্ছে। প্রতিটি ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এই পরীক্ষা করা হবে। ওই আধিকারিক বলেন, “সংক্রমণ কমে যাওয়ায় ও উপসর্গ না থাকায় গোটা জেলায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও কমে গিয়েছিল। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবার পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ কোনও উপসর্গ থাকলেই মানুষ যাতে পরীক্ষা করান, নতুন করে সেই প্রচারও শুরু হয়েছে।
পুর প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি হাওড়া পুরসভার তরফে শহরের আবাসনগুলিতে আয়োজিত শিবির থেকে আগের মতোই লালারস সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা হবে। হবে অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও। তবে সবটাই ভোটপর্ব মিটে গেলে হবে বলে জানানো হয়েছে।
হাওড়া জেলা হাসপাতালের ভিতরে আগেই একটি করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছিল। এ বার ওই কেন্দ্রে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেও ওই কেন্দ্রে পরীক্ষার সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছিল। ফের তা বাড়ছে। জেলা হাসপাতালের বাইরেও একটি শিবির করে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। প্রতিদিনই দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে লালারস সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে একই সঙ্গে জেলার প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচিতেও জোর দিচ্ছে প্রশাসন। পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের ১৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দৈনিক দু’হাজার লোক প্রতিষেধক নিচ্ছেন। এই পরিসংখ্যানের একটি ইতিবাচক দিক যে মানুষ এখন নিজেই আসছেন প্রতিষেধক নিতে।