Pond Encroachment

পুর নোটিস উপড়ে হাওড়ায় পুকুর বোজানোর অভিযোগ

অভিযোগ, সরকারি নোটিস উপড়ে ফেলে, একাধিক গাছ কেটে অবাধে বুজিয়ে ফেলা হল একটি ১৫ কাঠা পুকুরের ৭০ ভাগ।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

হাওড়া শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ০৫:১৮
Share:

রাতের অন্ধকারে আবর্জনা ফেলে এ ভাবেই ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে হাওড়ার ইছাপুর রোডে এইচআইটি আবাসন সংলগ্ন পুকুরটির বেশির ভাগ অংশ।  ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

মাত্র এক বছর আগে পুকুরটিকে বোজানোর খবর এসেছিল হাওড়া পুরসভার কাছে। তার পরেই পুরসভার চেয়ারপার্সন সপার্ষদ ঘটনাস্থলে গিয়ে নোটিস দিয়ে বোজানোর চেষ্টা রুখে দেন। কিন্তু অভিযোগ, সেই সরকারি নোটিস উপড়ে ফেলে, একাধিক গাছ কেটে অবাধে বুজিয়ে ফেলা হল একটি ১৫ কাঠা পুকুরের ৭০ ভাগ। হাওড়া জুড়ে বেআইনি নির্মাণ ও অবাধে পুকুর ভরাটের যে অভিযোগ গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন, সেই বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে হাওড়া পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইছাপুর রোডে এমনই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

অভিযোগ, মাত্র তিন দিনের মধ্যে রাতের অন্ধকারে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়টিকে চার দিক থেকে আবর্জনা ফেলে বুজিয়ে ফেলা হয়েছে! এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের একাংশ ও শাসকদলের এক নেতার হাত মাথায় থাকায় এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জমি মাফিয়ারা। এই ঘটনায় জলাভূমি বোজানোর অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হাওড়া পুরসভা।

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট বা এইচআইটি আবাসন লাগোয়া ইছাপুর রোডের ওই বিশাল পুকুরটি এলাকার বাসিন্দাদের জলের অন্যতম উৎস। বর্ষায় এলাকার অতিরিক্ত জল ধারণ করার ক্ষমতা থাকায় জমা জলের হাত থেকে রেহাই পান স্থানীয়েরা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই ওই জলাশয়টি বুজিয়ে বহুতল তৈরির চেষ্টা করছে এলাকার এক জমি মাফিয়া। গত বছর সেখানে মাটি ফেলার কাজ শুরু হতেই ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি তথা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সহকারী চেয়ারপার্সন দেবাংশু দাস পুরসভাকে বিষয়টি জানান। তার পরেই চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুরসভার আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থলে আসেন। নোটিস ঝুলিয়ে বন্ধ করে দেন পুকুর বোজানোর চেষ্টা। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ওই পুকুরের এক দিক টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়, যাতে লোকচক্ষুর আড়ালে বোজানোর কাজ শুরু করা যায়। অভিযোগ, কিছু দিন অপেক্ষা করার পরে শুরু হয় রাতে আবর্জনা ফেলে পুকুর বোজানোর কাজ।

Advertisement

এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি দেবাংশু বলেন, ‘‘ফের পুকুরটি বোজানো হচ্ছে খবর পেয়ে আমি এসে সমস্ত টিন খুলে দিই। দেখা যায়, পুকুরটির চার পাশ থেকে অনেকটাই বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় ব্যাঁটরা থানায় অভিযোগ জানাই। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওরা প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে বোজানোর কাজ করছে। গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে কাজ। আমরা ভয়ে প্রতিবাদ করিনি।’’

পুরসভার চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘ঘটনাটি আমাদের কানে এসেছে। পুর ইঞ্জিনিয়ারদের বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে কঠোরতম পদক্ষেপ করতে। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।’’

তবে পুকুর বোজানোর অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় থানার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হবে। জলাভূমি তো এ ভাবে ভরাট করা যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement