বাম কর্মীর বাড়ির সামনে বোমা। গোঘাটে। নিজস্ব চিত্র
মনোনয়ন দাখিলের পর্ব নির্বিঘ্নে মিটলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য আরামবাগ মহকুমা জুড়ে শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ অব্যাহত। বিরোধীদের অভিযোগ, ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে তৃণমূলের বাইক বাহিনী রাতভর ঘুরছে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
অভিযোগ, গোঘাট-১ ব্লকে তুলে নিয়ে গিয়ে ৩ সিপিএম এবং ৩ বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে তৃণমূলের লোকেরা। মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় আরও ৫ সিপিএম, ২ বিজেপি এবং এক জন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। আমরাবাগের বিজেপি বিধায়ক মধুসূদন বাগের অভিযোগ, ‘শাসকের সন্ত্রাসে আমাদের কয়েক জন মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন।’’ সিপিএম নেতা ফারুক আহমেদ লস্করেরও একই দাবি।
অভিযোগ, দলীয় প্রার্থীদের ‘আড়ালের’ চেষ্টা করায় রবিবার রাতে গোঘাটের কামারপুকুরে সিপিএম নেতা তিলক ঘোষের বাড়িতে বোমাবজি, ভাঙচুর হয়। পাশেই শ্রীপুর গ্রামে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা মোহন লাগা, সিপিএম নেতা শ্রীকান্ত চক্রবর্তী ও তারাপদ সেনগুপ্তর বাড়ির কাছে বোমাবাজি হয়। মোহনের বাড়ির লোহার ফটক ভাঙা হয়। খানাকুল-১ ব্লকে আরএসপির জেলা পরিষদ প্রার্থী ইন্দ্রজিৎ ঘাঁটিকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। দলের নেতা বিপ্লব মজুমদার জানান, থানায় অভিযোগ দায়ের করে প্রার্থীর নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়েছে। দলের নেতাদের অনুমান, তৃণমূল বা বিজেপির তরফে এই হুমকি। কোনও দলই অভিযোগ মানেনি। সার্বিক অভিযোগ নিয়ে আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি পলাশ রায়ের বক্তব্য, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোট হবে, এটাই দলের নির্দেশ। এর পরেও অপ্রীতিকর কিছু হলে, প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’ গোটা জেলায় রবিবার পঞ্চায়েত আসনে সিপিএম ও বিজেপির যথাক্রমে ৬৯ ও ৩৪টি মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে। তৃণমূলের ১৩৪ জন ‘গোঁজ’ প্রার্থী মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন।
চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া-২ পঞ্চায়েতের নলডাঙ্গায় বিজেপির লেখা দেওয়ালে রবিবার রাতে কে বা কারা কাদা ছিটিয়ে দেয়। বুথের বিজেপি প্রার্থী অপর্ণা দাশগুপ্ত বিশ্বাসের অভিযোগ, তৃণমূল এই কাজ করেছে। অভিযোগ মানেননি এলাকার তৃণমূল প্রার্থী নমিতা গোস্বামী।
রবিবার রাতে ভদ্রেশ্বরের বিঘাটি পঞ্চায়েতের চর্চিকাতলা তৃণমূলের দেওয়াল লিখনে সিমেন্ট গুলে লাগানোর অভিযোগ উঠল বিরোধীদের বিরুদ্ধে। ভদ্রেশ্বর থানায় অভিযোগ করেছেন গ্রামসভার প্রার্থী হরিপদ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার পিছনে সিপিএম ও বিজেপি রয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে স্থানীয় সিপিএম প্রার্থী শ্যামল পাত্রের বক্তব্য, ‘‘এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।’’ একই বক্তব্য বিজেপি নেতা সুরেশ সাউয়ের।
গোঘাট-১ ব্লকের কুমুড়শা পঞ্চায়েতের মথুরা গ্রামের তৃণমূল প্রার্থী সুচিত্রা ভুঁইকে মারধরের অভিযোগে বিজেপি নেতা পল্টু খাঁ’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি অরাজনৈতিক বলে গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারকের দাবি।