এলাকায় খবরদারি করাকে কেন্দ্র করে সপ্তাহখানেক ধরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর অশান্তি চলছিলই। শুক্রবার সাতসকালে দু’পক্ষের বোমাবাজিতে তেতে উঠল আরামবাগের বাতানল পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন বাজার। ব্যবসাস্থলে রাজনৈতিক উপদ্রবের প্রতিবাদে সকালে বাজার বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের আশ্বাসে বিকেলে অবশ্য ফের বাজার সচল হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের তরফে কোনও নাম ছাড়া অশান্তির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করে ধরার চেষ্টা চলছে। বোমাবাজিতে কেউ হতাহত হননি। এলাকায় পুলিশের টহলদারি আছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে মরারপাড় নামে ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের কেউ সবে দোকান খুলেছেন, কেউ খোলার জন্য হাজির হচ্ছিলেন। সে সময় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কয়েক জন একে অপরের বিরুদ্ধে পুরনো একটি সংঘর্ষে মামলা দায়ের করা নিয়ে বচসায় জড়ায়। আচমকা দু’টি বোমা ফাটে বলে অভিযোগ। হতচকিত ব্যবসায়ীরা দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে পালান। ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। ততক্ষণে অবশ্য বিবদমান দুই গোষ্ঠী পালায়।
স্থানীয় মানুষের দাবি, দুই গোষ্ঠীর এক পক্ষ পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ রায়ের অনুগামী, অন্য পক্ষ গ্রামের আর এক নেতা কাঞ্চন মুন্সীর অনুগামী। গত ৯ নভেম্বর পঞ্চায়েতের কিছু কাজের দরপত্রে বরাত পাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ১১ নভেম্বর দু’পক্ষের সংঘর্ষে জনাচারেক আহত হয়। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত বাকিরা এখনও ধরা পড়েনি। তারাই এ দিন ঝামেলা পাকিয়েছে বলে অভিযোগ।
বোমাবাজির কথা স্বীকার করে দু’পক্ষের নেতারাই পরস্পরের উপর দোষ চাপিয়েছেন। প্রধান দিলীপ রায়ের অভিযোগ, ‘‘কাঞ্চন নিজে দুষ্কৃতী। তার লোকেরাই লাগাতার অশান্তি চালিয়ে যাচ্ছে।” পক্ষান্তরে, কাঞ্চনের পাল্টা অভিযোগ, “প্রধানের নানা দুর্নীতিতে সাধারণ মানুষ বীতশ্রদ্ধ। মানুষের পক্ষে আমরা প্রতিবাদ করাতেই প্রধানের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা হামলা করে চলেছে।”
বাজারটির ব্যবসায়ীদের পক্ষে অমর নাথ, শেখ নাসু প্রমুখ জানান, তাঁদের আবেদন, মানুষের রুটি-রুজির ক্ষেত্র বাজারগুলিতে যাতে রাজনীতির আঁচ না পড়ে। বাজারগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে প্রশাসনের কাছেও আবেদন করা হয়েছে।