বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ইন্ডোর স্টেডিয়াম। চুঁচুড়ায়। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক কোটি টাকা খরচ করে স্টেডিয়াম তো হয়েছে। কিন্তু তা চালাবে কে, দিনের পর দিন সেই উত্তরই মিলছে না। অতএব বছর ঘুরতে চললেও খেলাধুলোর বালাই নেই চুঁচুড়ার ওই ইনডোর স্টেডিয়ামে। জমছে ধুলো। প্রশাসনিক ভাবে অবশ্য তা স্বীকার করা হচ্ছে না।
যদিও প্রশাসনের তরফে ঢাকঢোল পিটিয়ে বলা হয়েছিল, ফ্লোর গেমস, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস-সহ সব ধরনের উন্নত ইনডোর গেমস খেলা হবে এখানে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। সে সব কবে হবে, কেউ জানাতে পারছেন না। তবে, খেলা চালানোর জন্য ‘চেষ্টা চলছে’, প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানাতে ভুলছেন না প্রশাসন বা স্থানীয় হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার কর্তারা।
চুঁচুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে রাজ্যের যুবকল্যাণ দফতরের আর্থিক সহায়তায় ওই স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়। ঘটা করে উদ্বোধনও করা হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন। স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, উদ্বোধনই সার। নিময় করে খেলাধুলো চালুই হয়নি। স্টেডিয়ামের মেঝের কাজও এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হলেও, ওই অর্থ জলে যেতে বসেছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবকল্যাণ দফতর চেয়েছিল, স্থানীয় প্রশাসন বা পুরসভা স্টেডিয়ামের দায়িত্ব নিক। নির্দিষ্ট পরিচালন কমিটি তৈরি করে ওই স্টেডিয়াম দেখভাল ও খেলাধুলোর ব্যবস্থা করুক। কিন্তু স্টেডিয়ামটি পরিচালনা করবে কারা, তা এখনও নির্দিষ্ট না হওয়ায় সেটি কার্যত অব্যবহৃত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে।
বিষয়টি অস্বীকার করেননি পুরপ্রধান অমিত রায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘স্টেডিয়ামটি কাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে, সেই নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে, এটা বাস্তব। স্টেডিয়ামটির যা পরিধি, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে বড়সড় পরিকাঠামো জরুরি। অনেক কর্মী প্রয়োজন। বিদ্যুৎ খরচও প্রচুর। অত টাকা পুরসভার নেই। তাই আমাদের পক্ষে দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব হয়নি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রশাসনিক স্তরে কথাবর্তা চলছে। ব্যবস্থা নিশ্চিত কিছু একটা হবে।’’ পুরপ্রধান জানান, স্টেডিয়াম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ বর্তমানে পুরসভার তরফেই করা হয়।
ক্রীড়ামহল অবশ্য গোটা বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত, ক্ষুব্ধ। উন্নত মানের স্টেডিয়াম তৈরি করেও এত দিনেও কেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া গেল না, এই প্রসঙ্গে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘স্টেডিয়ামের মেঝের বকেয়া কাজ যুবকল্যাণ দফতরের তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে। অন্য সমস্যা মিটিয়ে শীঘ্রই সেখানে পূর্ণমাত্রায় খেলাধুলো শুরু হবে।’’