—প্রতীকী ছবি।
কোথাও রাস্তায় ঢালা পিচ নিয়ে অভিযোগ, কোথাও পথে পাতা ইটের মান নিয়ে ক্ষোভ। সিমেন্ট-বালির মান নিয়েও পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি নানা নির্মাণের ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যেই অভিযোগ ওঠে। অনেক ক্ষেত্রেক্ষোভ-বিক্ষোভ, অবরোধ হয়। গ্রামবাসীরা কাজ বন্ধ করে দেন, এমন অভিযোগও বিরল নয়। এ বার নির্মাণ সামগ্রীর মানের দিকে কড়া নজর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। জানানো হয়েছে, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নির্মাণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দ্রব্য ব্যবহারে ভারতীয় মানক ব্যুরো তথা ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) স্বীকৃত সরঞ্জামই ব্যবহার করতে হবে।
কেন্দ্রের পাঠানো ওই নির্দেশ গত সোমবার রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে জেলাগুলিতে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকায় ‘বিআইএস’ স্বীকৃত সিমেন্ট, কাদামাটির ইট, ছাইয়ের ইট, বালি-সহ বিস্তারিত ভারতীয় মানগুলির তালিকা দেওয়া হয়েছে।
হুগলি জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন আধিকারিক (ডিপিআরডিও) পার্থ কর্মকার বলেন, “নির্মাণকাজ-সহ বিভিন্ন পরিষেবায় গুণগত দ্রব্যই ব্যবহার করা হয়। এরপরেও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এই নির্দেশিকা পঞ্চায়েতগুলিতে পাঠিয়ে তা কার্যকর করতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করতে বিআইএস কর্তৃপক্ষ প্রশিক্ষণও দেবে।”
জেলার বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনে এসে নানা কাজে নিম্নমানের জিনিস ব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছে। তারপরেই নির্মাণ উপাদানের গুণগত মান নিশ্চিত করতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ এক দফা নির্দেশ এসেছিল। যাবতীয় নির্মাণসামগ্রী ল্যাবরেটরিতে (‘সিভিল ল্যাবরেটরি’) পরীক্ষা করে তবেই ঠিকাদারের টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। প্রতিটি পঞ্চায়েতে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল থেকে পরীক্ষাগার তৈরির নির্দেশ আসে। পরীক্ষাগার পিছু ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। অথচ, জেলার গোঘাট-১ ব্লকের গোঘাট, গোঘাট-২ ব্লকের কামারপুকুর-সহ ৯টি ব্লকে সেই কাজ হলেও পরীক্ষাগার চালু হয়নি বলে অভিযোগ।
কাজগুলির নজরদারি নিয়ে অনেক অভিযোগ। বিভিন্ন ব্লক সূত্রে খবর, প্রতিটি কাজের পরে তার টাকা পরিশোধের ছাড়পত্র দিতে ব্লকের আইএসজিপি প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ, ব্লক প্রশাসনের বিশেষজ্ঞ এবং পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক নিয়ে তিন জনের কমিটি থাকে। তার পরেও পঞ্চায়েত এলাকার নানা নির্মাণে গরমিলের অভিযোগ ওঠে। এ বার বিআইএস স্বীকৃতি সরঞ্জাম কেনা বাধ্যতামূলক হলে ওই খাতে দুর্নীতি কমবে হবে বলে বিডিওদের মত।
তথ্য সহায়তা: গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়