সংস্থার দফতরে তাণ্ডব দুষ্কৃতীদের। —নিজস্ব চিত্র।
হুগলির চন্দননগরে স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থায় দিনেদুপুরে ডাকাতি। গত মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল ওই সংস্থার দফতরে ঢুকে পড়ে গ্রাহক হিসাবে। ভিতরে ঢুকে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে তারা। পিস্তল উঁচিয়ে লুঠপাট চালায় তারা। ডাকাতির সময়কার সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়।
গত মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে জিটি রোড লাগোয়া স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থার দফতরে হানা দেয় চার দুষ্কৃতী। তাদের সকলের হাতেই ছিল পিস্তল। ঘটনার সময়কার সিসি ক্যামেরার ছবি পাওয়া গিয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের মধ্যে দু’জন ওই সংস্থার দফতরে তারা ঢুকেছিল গ্রাহক হিসাবে। যেন, সোনা জমা রেখে ঋণ নিতে চায়। বাকি দু’জন অপেক্ষা করছিল বাইরে, গেটের পাহারায়। ভিতর থেকে সঙ্কেত পেতেই তারা ওই সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীর দিকে পিস্তল উঁচিয়ে ধরে। নিরাপত্তারক্ষীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জোর করে ভিতরে নিয়ে যায়। দফতরের ভিতরেও শুরু হয় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। ছবিতে দেখা গিয়েছে, সেই সময় এক মহিলা এবং এক পুরুষ কর্মী চেয়ারে বসেছিলেন। ছিলেন দু’জন গ্রাহকও। হঠাৎ এক দুষ্কৃতী ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র বার করে টেবিল টপকে গিয়ে কর্মীদের নিশানা করে। আর এক দুষ্কৃতী সামনে থেকে টাকা লুট করতে থাকে। পিঠে কালো ব্যাগ নিয়ে থাকা এক দুষ্কৃতী নিরাপত্তারক্ষীকে পিস্তল ঠেকিয়ে ঘরের ভিতরে ঢোকায়। সেই সময়েই কেউ এক জন বিপদঘণ্টি বাজিয়ে দেন। ভয় দেখাতে শূন্যে গুলিও ছোড়ে ডাকাতরা। তবে তত ক্ষণে পুলিশও খবর পেয়ে যাওয়ায় ডাকাতির ছক বানচাল হয়ে যায়।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার থেকে আসা দুষ্কৃতীদের ওই দলটি স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থায় ডাকাতি করতে ‘ওস্তাদ’। পুলিশ যাতে পৌঁছতে না পারে বা কোনও রকম যোগাযোগ করতে না পারে সে জন্য প্রযুক্তিরও সাহায্য নিত তারা। চন্দননগরে ডাকাতি করতে দু’টি পোর্টেবল জ্যামার ব্যবহার করা হয়েছিল। তাদের কাছে মিলেছে ওই জ্যামার। ডাকাতির আগে তারা ‘রেইকি’ও করেছিল বার বার। মঙ্গলবার চন্দননগর বাজার বন্ধ থাকে। সেই সুযোগ নিয়েই ডাকাতির ছক সাজানো হয়। তবে পুলিশ এসে যাওয়ায় তারা ভল্ট ভেঙে সোনা নিতে পারেনি। তার বদলে দেড় লক্ষ টাকা নিয়েই চম্পট দেয়। কিন্তু পুলিশি সক্রিয়তায় শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যায় ওই ডাকাতদলের তিন সদস্য। বাকি এক জনের খোঁজ এখনও চালাচ্ছে পুলিশ।