অকেজো: ঘন ঘন বাজ পড়ায় হাওড়া কমিশনারেট এলাকার বহু সিসি ক্যামেরাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। হাওড়া সেতু সংলগ্ন অঞ্চলে তেমনই দু’টি ক্যামেরা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৭০০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে আছে প্রায় দেড় বছর ধরে। ক্যামেরা বসানোর জন্য রাজ্য পরিবহণ দফতর যে ছ’লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল, পড়ে আছে তা-ও। এর মধ্যেই হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এলাকার বেশ কিছু জায়গায় গত বুধবার বাজ পড়ে খারাপ হয়ে গিয়েছে ২১৯টি ক্যামেরা। ফলে, হাওড়া শহরে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিতকরণ বা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই সমস্যায় পড়ছে সেখানকার পুলিশ।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে শহর জুড়ে মোট এক হাজারটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে তাদের। এর পাশাপাশি, গত বছর আরও ৭০০টি ক্যামেরা বসানোর জন্য ছ’লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। সিসি ক্যামেরা কেনা ও তা লাগানোর জন্য এই টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য পরিবহণ দফতর। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, গত বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ায় ক্যামেরা বসানোর কাজ আরম্ভ হওয়ার ক’দিন পরেই বন্ধ হয়ে যায়।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) অর্ণব বিশ্বাস বললেন, ‘‘শহরের প্রতিটি রাস্তা, এমনকি অলিগলিতেও এ বার ক্যামেরা লাগানো হবে। অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পরেও কোভিডের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব ক্যামেরা লাগানো যায়নি। এর মধ্যেই আবার বাজ পড়ে ২১৯টি ক্যামেরা খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’
ডিসি (ট্র্যাফিক) জানান, লিলুয়া ও বালির মতো বেশ কিছু এলাকার ভিতরের রাস্তাতেও ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত বুধবার বাজ পড়ায় হাওড়া স্টেশন এবং হাওড়া সেতু-সহ গোলাবাড়ি এলাকার প্রচুর সিসি ক্যামেরা খারাপ হয়ে যায়। ওই ক্যামেরাগুলি সারানো হচ্ছে। এই কাজের জন্য দু’টি দলকে কাজে লাগানো হয়েছে। বিকল হয়ে পড়া ক্যামেরাগুলি ঠিক হয়ে গেলে নতুন ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হবে।
হাওড়া সিটি পুলিশের আর এক জন পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘মেরামতির কাজ শেষ না হওয়ায় বর্তমানে বহু এলাকাতেই সিসি ক্যামেরা নেই। তাই সেখানে অপরাধমূলক কোনও কাজ বা দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তার ছবি পাওয়া যাবে না। ফলে তদন্তে মারাত্মক সমস্যা হবে। তা ছাড়া, এতগুলি ক্যামেরা একসঙ্গে খারাপ হয়ে যাওয়ায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণেও সমস্যা হচ্ছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, সে দিন প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে কয়েক সেকেন্ড অন্তর মুহুর্মুহু বাজ পড়ায় ক্যামেরার যে অংশ দিয়ে রেকর্ডিং হয়, সেই এনভিআর পুড়ে গিয়েছে। তাই এলাকার ছবির কোনও রেকর্ডিং থাকছে না। এই সময়ে রাস্তায় কোনও দুষ্কর্ম করে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে অপরাধীরা। পুলিশকর্তারা জানান, এই সমস্ত কথা চিন্তা করেই এই কোভিড পরিস্থিতিতেও ক্যামেরা সারানোর কাজ চলছে। আশা করা যায়, দু’সপ্তাহের মধ্যেই নতুন ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে।