প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় ধনেখালিতে এক তৃণমূল কর্মী খুনের মামলায় বুধবার এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃতের নাম উৎপল বিশ্বাস। তারকেশ্বর বাস স্ট্যান্ড চত্বরে তাঁর বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান আছে। এ দিন সেখান থেকেই তাঁকে ধরা হয়।
২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষিত হয়। এক দিন পরে, অর্থাৎ ৪ মে বিজেপি-তৃণমূলের গোলমালে উত্তপ্ত হয় তারাকেশ্বর বিধানসভার চৌতারা। জায়গাটি ধনেখালি থানায় পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সংঘর্ষে দু’দলের আট কর্মী আহত হন। আহতদের তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তৃণমূল কর্মী শুকচাঁদ বেসরা এবং গোপাল পাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সে দিনই বছর বিয়াল্লিশের গোপাল মারা যান।
তৃণমূলের অভিযোগ, ঘটনার দিন অন্নপূর্ণা পুজো নিয়ে আলোচনা চলাকালীন বিজেপির ৩০-৩৫ জন লোক বাঁশ, লোহার রড, টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে আক্রমণ করে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে ধনেখালি থানার পুলিশ। পরে, আদালতের নির্দেশে তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে।
এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে সিবিআই আধিকারিকরা ধনেখালিতে আসেন। ধনেখালি থানায় নিয়ে গিয়ে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিকেলে ধৃতের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার চৌতারা গ্রামে গিয়ে মৃতের পরিবার এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, তৃমমূল কর্মী অনুপ ঘোষের বাড়িতেও যান।
অনুপ বলেন, ‘‘সিবিআই এই নিয়ে ৯ বার গ্রামে এল। কিন্তু, খুনের কিনারা করতে পারল না। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ বা সিআইডি তদন্ত করলে এত দিনে খুনিরা গ্রেফতার হয়ে যেত। সিবিআই তদন্তে আমাদের বিশ্বাস নেই।’’
তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন মামলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধেএকতরফা ভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে সিবিআই। এ নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন ওঠায় ‘লজ্জা ঢাকতে’ ধনেখালিতে এক বিজেপি কর্মীকে ধরা হল। তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় বলেন, ‘‘সিবিআই কেন্দ্রীয় সরকারের কথামতো চলে। রাজ্য পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছিল। আমরা চাই, রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিয়ে দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হোক।’’
পুরশুড়ার বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপি নেতা বিমান ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলছে। সিবিআই এবং ইডির ডাক এলেই তৃণমূল নেতারা হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন। সিবিআই তদন্তে তৃণমূল বিশ্বাস করতে পারবে না, এটাই স্বাভাবিক। ভোট পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের হামলায় বহু বিজেপি কর্মীর প্রাণ গিয়েছে। সেই তদন্তও সিবিআই করছে।’’