বহুতলের নীচে সদ্যোজাতের দেহ উদ্ধার। প্রতীকী চিত্র।
বহুতলের নীচ থেকে উদ্ধার হল সদ্যোজাত এক কন্যাসন্তানের দেহ। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার শিবপুর এলাকায়। এই ঘটনা ঘিরে রহস্য ঘনিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বহুতলের এক তরুণীর ওই সদ্যোজাত সন্তান। বিয়ের আগে সন্তান হওয়ায় তাকে জন্মের পরেই উপর থেকে ফেলে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ শিবপুরের একটি বহুতলের নীচ থেকে উদ্ধার হয় এক সদ্যোজাত শিশুকন্যার দেহ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, উপর থেকে কিছু একটা সজোরে পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনতে পান। এর পরেই তাঁরা ছুটে এসে ওই সদ্যোজাতের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। মদিনা খাতুন নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘বেলা ১২টা নাগাদ কোনও কিছু জোরে পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই। আমরা এখানে এসে একটি শিশুকে পড়ে থাকতে দেখি। এই বাড়ি থেকেই শিশুটি পড়েছে।’’
রুকসানা খাতুন নামে ওই এলাকার আর এক মহিলা বলেন, ‘‘আমি শুয়েছিলাম। হঠাৎ জোরে আওয়াজ হল। কাছে এসে দেখি একটি শিশু পড়ে আছে। দেখে মনে হল, ১০-১৫ মিনিট আগে ওই কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে। জানতে পেরেছি, এই বহুতলের একটি মেয়ে এবং তাঁর মাকে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। মেয়েটি হাসপাতালে ভর্তি বলে জানতে পেরেছি। আশপাশের লোকজন বলছে, মেয়েটির সঙ্গে তার মায়ের অশান্তি হয়েছিল। মেয়েটির বিয়ে হয়নি। ১৮-১৯ বছর বয়স। আজ মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, ওই সদ্যোজাত ওরই সন্তান। মেয়েটি তিন-চার মাস এখানে ছিল না। কিছু দিন আগে এসেছে।’’
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে নুরজাহান নামে আর এক মহিলার বক্তব্য, ‘‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম পুতুল পড়েছে। কাছে গিয়ে দেখি একটি শিশু। পড়ামাত্র ওর মৃত্যু হয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, ওই মেয়েটিরই সন্তান। মেয়েটি পড়াশোনা করে। ও ইদানীং বোরখা পরে ঘোরাফেরা করত।’’
শিবপুর থানার পুলিশ অবশ্য এই ঘটনাকে এখনই খুন বলতে নারাজ। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সব দিক। শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে মেয়ে এবং তাঁর মাকে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মেয়েটি আপাতত একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।