শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুরে দিল্লি রোডের ধারে কারখানায় বিস্ফোরণ। — নিজস্ব চিত্র।
কামানের গোলা গলানোর সময়ই কি বিস্ফোরণ হয় শ্রীরামপুরের কারখানায়! কারখানার শ্রমিকেরা তেমনটাই দাবি করেছেন। সেই নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। এই ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইন। বৈধ ভাবে এই কাজ হচ্ছিল কিনা, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।
শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুরে দিল্লি রোডের ধারে কারখানায় বিস্ফোরণ। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুই শ্রমিকের। আহত চার জন। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁদের কলকাতায় রেফার করা হয়। ছাঁট লোহায় গ্যাস কাটিংয়ের কাজ করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটেছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গণেশ স্টিল নামে ওই কারখানায় লোহার ছাঁট (স্ক্র্যাপ) থেকে লোহা গলানো হয়। তাতে অনেক শেলও থাকে। শ্রমিকরা গ্যাস দিয়ে সেই ছাঁট কাটার কাজ করছিলেন। হঠাৎই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। যে সব শ্রমিকেরা সেখানে কাজ করছিলেন, তাঁরা আহত হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের।
এই ঘটনার জেরে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখান। অফিস ঘরে ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ হাজির হয়। খবর পেয়ে কারখানায় যান স্থানীয় বিধায়ক। বিধায়ক অরিন্দম বলেন, ‘‘লোহা কাটাইয়ের কাজ করার সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে, এগুলি ডিফেন্সের ছাঁট লোহা। অল্প পারিশ্রমিকে শ্রমিকদের এই সমস্ত কাজ করানো হয়। বিষয়টা কতটা বৈধ বা অবৈধ, সেটা দেখা দরকার। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে বা যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’’
ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন কারখানার শ্রমিকরা। কারখানার শ্রমিক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘অনেক ধরনের লোহার ছাঁট মাল এখানে আসে। বড় লোহা হলে সেগুলিকে গ্যাস দিয়ে কাটিং করে আমরা ছোট করি। অনেক ধরনের লোহা আসে, যার মধ্যে কামানের গোলাও থাকে। যেগুলিতে বারুদ থাকে, সেগুলি আলাদা করে দূরে ফেলে রাখি। সুপারভাইজার ভিম সিংহ বলেন, ওই গোলাগুলি কাটার সময় বিস্ফোরণ হয়। কারখানায় আমাদের নিরাপত্তা নেই।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ পালের দাবি, দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। মৃতদেহ বার করে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা বাধা দেন। কারখানার ম্যানেজার কুণাল রায় বলেন, ‘‘আমি ১১টার সময় এসে দুর্ঘটনার কথা জানতে পারি। হাসপাতালে গিয়েছি। মৃত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’’ চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘কারখানায় একটা দুর্ঘটনা হয়েছে। দু’জন মারা গিয়েছে। কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’