সুকান্তের বাইক মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। — নিজস্ব চিত্র।
বাম যুবদের ব্রিগেড সমাবেশের দিনই হাওড়া এবং হুগলিতে বিজেপির বাইক র্যালি ঘিরে ধুন্ধুমার। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বাইক মিছিল নিয়ে এগোতে গিয়ে বাধা পান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রতিবাদে সেখানেই বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সুকান্ত। এর ফলে আটকে যায় যানচলাচল। পুলিশ বিজেপি নেতা-কর্মীদের রাস্তা থেকে তুলতে গেলে দু’পক্ষে ধস্তাধস্তিও হয়। পরিস্থিতি মোতায়েন করতে নামানো হয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
হুগলির ডানকুনি থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে হাওড়ার ডোমজুড় থানা পর্যন্ত বিজেপির যুব সংকল্প যাত্রা চলছিল রবিবার। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার উদ্যোগে আয়োজিত বাইক র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সুকান্ত। তাঁর আসার কথা ছিল সাড়ে ১১টা নাগাদ। কিন্তু কলকাতার রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে হুগলি পৌঁছতে খানিকটা বিলম্ব হয় সুকান্তের। তিনি পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় কর্মসূচি।
যদিও বাইক মিছিল এগোতে দেবে না পুলিশ, আগেই জানিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের বাধা না মেনে সুকান্তের নেতৃত্বে এগোতে শুরু করে বাইক মিছিল। প্রথমে সিএন মুখার্জি রোডে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে যায় র্যালি। বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে যান। কিছুটা দূরে ডানকুনির হাউজ়িং মোড়ে আবার পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে যায় বিজেপির বাইক মিছিল। ভাঙার চেষ্টা করেও লাভ হয় না। প্রতিবাদে সেখানেই বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বসে পড়েন সুকান্ত। চলছে থাকে বিক্ষোভ। তাঁদের তুলে দিতে এলে পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তিও হয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের। অভিনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে এগোচ্ছিলাম। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের পোশাক পরিয়ে গুন্ডাবাহিনীকে পাঠিয়ে দিয়েছে। সন্দেশখালিতে পুলিশ ছিল না আর এখানে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ! পুলিশকে আমার একটাই প্রশ্ন, আমাদের রাজ্য সভাপতির হাতে তো লাঠিও নেই, বোমাও নেই, ইটও নেই, তা হলে আমাদের আটকে আপনাদের লাভ কি?’’ কিন্তু পুলিশ হিরণের কথা মানেনি। বিজেপি কর্মীদের রাস্তা থেকে তুলে দিতে শুরু করে পুলিশ। এর ফলে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। সিএন মুখার্জি রোড এবং ডানকুনি হাউজ়িং মোড়ে একযোগে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন খোদ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। এর জেরে গোটা এলাকায় ট্র্যাফিক তালগোল পাকিয়ে যায়। দুর্ভোগের শিকার হন রাস্তায় বেরোনো সাধারণ মানুষ।
সুকান্ত বলেন, ‘‘কোনও প্ররোচনা ছাড়া পুলিশ আমাদের কয়েক জনকে আটক করে ভ্যানে তুলে নেয়। আমি ধস্তাধস্তি করে তাঁদের ছাড়িয়ে আনি। তার পর পুলিশ আমার দুই কর্মীর মাথায় লাঠি মারে। আমি তো অবাক হয়ে যাচ্ছি, এঁরা পুলিশ না তৃণমূলের গুন্ডা! এরই প্রতিবাদে আমরা বাধ্য হই জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে। আমরা কখনওই জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে চাই না। এতে দেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু আমরা আজ বাধ্য হলাম অবরোধ করতে। পুলিশ কথা দিয়েছে, আমাদের যে কর্মীকে লাঠিপেটা করা হয়েছে তাঁকে যে মেরেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। পুলিশের এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে আমরা অবরোধ তুলে নিচ্ছি। প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে আমরা থানা ঘেরাও করব।’’