পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মিছিল ছিল বিজেপির। কিন্তু সেখানে দেখা গেল লাল ঝান্ডাও! —নিজস্ব চিত্র।
আবার হুগলি। আবার বিজেপির মিছিলে দেখা গেল সিপিএমের পতাকা। কিছু দিন আগে হারিট পঞ্চায়েতে বিজেপির কর্মীদের হাতে দেখা গিয়েছিল লাল ঝান্ডা। এ বার হুগলির সুগন্ধায় পঞ্চায়েত অফিসের বিজেপির ডেপুটেশনে নজরে এল সিপিএমের লাল পতাকা। বিজেপির মিছিলে কেন সিপিএমের পতাকা, বুধবার এ নিয়ে শোরগোল হুগলির রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির দাবি, সিপিএম কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে ‘নোংরা রাজনীতি’র অভিযোগ করেছে সিপিএম।
বুধবার আবাস যোজনা এবং একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সুগন্ধা পঞ্চায়েতে মিছিল করে স্মারকলিপি জমা দিতে যান বিজেপির নেতাকর্মীরা। সেই মিছিলে দেখা গেল সিপিএমের পতাকা হাতে নিয়ে হাঁটছেন কেউ কেউ। এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘৩৫ বছর হল সিপিএম করি। কিচ্ছু পাইনি। তাই বিজেপির মিছিলে এসেছি।’’ কিন্তু হাতে কেন সিপিএমের পতাকা? উত্তর না দিয়ে মিছিলে হাঁটতে শুরু করেন তিনি।
সুশান্ত নায়েক নামে এক প্রৌঢ়ের যুক্তিও তেমনই। বিজেপির মিছিলে সিপিএম পতাকা ঘাড়ে নিয়ে সুশান্ত বলেন, ‘‘সিপিএমে আছি। তবে বিজেপির সঙ্গে জড়িত হয়েছি। আমরা কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছি না। তাই বিজেপির মিছিলে এলাম। আসতে বাধ্য হয়েছি।’’
এর আগে হারিটে সিপিএম পতাকা নিয়ে বিজেপি মিছিল প্রসঙ্গে সিপিএমের অভিযোগ ছিল, ‘‘এটা বিজেপির রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা।’’ সিপিএম নেতারা দাবি করেন, রাস্তা থেকে লাল ঝান্ডা নিয়ে বিজেপি মিছিল করেছে। সেখানে তাঁদের কোনও কর্মী ছিলেন না। বুধবারের মিছিলের ছবি নিয়ে বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘৩৪ বছর সরকারে থেকেও অনেক সিপিএম কর্মী বঞ্চিত ছিলেন। তাঁরা কিছুই পাননি। তাই এখন বিজেপির সঙ্গে থাকতে চাইছেন। তাঁরা দেখছেন বিজেপিই গরিব মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করছে।’’
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সিপিএম কর্মী শতদ্রু দাস বিজেপির মিছিলে হেঁটে যাওয়া কয়েক জনের হাত থেকে লাল ঝান্ডা কেড়ে নেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের কোনও সম্পর্ক নেই। আর দলের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ভাবে আমাদের দলের ঝান্ডা নিয়ে বিজেপির সঙ্গে মিছিল করার প্রয়োজন নেই।’’ এ নিয়ে হুগলির সিপিআইএম জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘চূড়ান্ত নোংরামোর রাজনীতি করছে বিজেপি। এগুলো মানুষ ধরে ফেলেছে।’’ যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। তরজা অব্যাহত।