শুভেন্দু অধিকারীকে তোপ সুরজিৎ সাহার।
নারদা-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে বহিষ্কৃত হলেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা। পুরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্প্রতি হাওড়ায় একটি কমিটি গড়েন শুভেন্দু। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ ওই বিজেপি নেতা। বুধবার তা নিয়েই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই সুরজিৎকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার সুরজিৎ সংবাদমাধ্যমের সামনে শুভেন্দুকে নিশানা করে জানিয়ে দেন, যে কমিটি শুভেন্দু গঠন করেছেন তাতে দলীয় ‘নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ’ হয়েছে। ওই কমিটিকে ‘ভারতীয় জনতা তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’ বলেও আখ্যা দেন তিনি। বলেন, ‘‘যাঁরা দলে থাকবেন কি না তা ই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাঁদের চেয়ারম্যান করা হচ্ছে। নাম প্রস্তাব করছেন শুভেন্দু। বিজেপি-র তৃণমূলীকরণ আমরা মানব না। আমি ২৮ বছর বিজেপি করছি। উনি ছ’মাস আগে দলে এসে আমাদের শংসাপত্র দেবেন না কি? আমরা ওঁর শংসাপত্র চাইব। নারদাতে ওঁকে যে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে তাতে উনি সৎ কি না, এই প্রশ্নটা জনগণ থেকে দলের কার্যকর্তা সকলের মধ্যে তৈরি হয়েছে। উনি আমাদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলবেন এটা জেলা সভাপতি হিসাবে মেনে নেব না।’’ প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর তৈরি করা কমিটির মাথায় রয়েছেন তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া হাওড়ার রথীন চক্রবর্তী। তাঁকেও নিশানা করেছেন সুরজিৎ।
সুরজিতের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। এর পর বিকেলের দিকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তড়িঘড়ি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। হাওড়ায় বিজেপি-র খারাপ ফল নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্বকে শুভেন্দু বিঁধেছেন বলে অভিযোগ সুরজিতের। বিজেপি-র জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে হাও়ডার তৃণমূল নেতা অরূপ রায়ের যোগাযোগ ছিল— এমন প্রশ্নও শুভেন্দু তুলেছেন বলেও অভিযোগ সুরজিতের। সেই প্রসঙ্গেই শুভেন্দুকে নিশানা করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে অভিযোগ তিনি তুলেছেন সেটা যদি প্রমাণ করতে না পারেন তা হলে তাঁকে হাওড়ার বিজেপি কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’’
বহিষ্কারের নির্দেশ। নিজস্ব চিত্র।
এই বিষয়ে তৃণমূলের হাওড়া সদরের সভাপতি এবং ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ দাবি করেন, ‘‘এই অভিযোগ লজ্জাজনক। ভোটে হেরে ভুলভাল বকছে বিজেপি। মানুষ ওদের পাশে পাশে নেই। ওদের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। নিজেদের পিঠ বাঁচাতে এখন এই সব হাস্যকর কথা বলছে।’’
হাওড়ায় বিজেপি-তে বিতর্কের আবহেই বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গাতেও ভাঙন পদ্মশিবিরে। দেগঙ্গা এক নম্বর অঞ্চল থেকে বিজেপি-র ব্লক স্তরের সম্পাদক এবং বুথ সভাপতি-সহ প্রায় ২০০ কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে বিধায়ক হাজি শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘যে ভাবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়ন চলছে তাতে সাধারণ মানুষ আর কাউকে ভাবতে পারবেন না।’’ ভয় দেখিয়ে দল ভাঙানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।