পাঁঠার জন্মদিন পালন চুঁচুড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
মাথায় রঙিন টুপি। তাতে লেখা ‘হ্যাপি বার্থডে’। গায়ে লাল রঙের জামা। সেজেগুজে সন্ধ্যা হতেই মালিকের সঙ্গে হাজির সে। তার পর রীতিমতো মালিকের সঙ্গে ছুরি ধরে কেক কাটল। সবাই জন্মদিনের গান গাইলেন। নিজের ভাষায় উত্তরও দিল সে। তার জন্মদিন উপলক্ষে খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন করা হয়। রাতে পাত পেড়ে খেলেন চুঁচুড়ার ১৫০ জন!
হুগলির চুঁচুড়ার বুনো কালীতলার বাসিন্দা বাবলু ওঁরাও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিক এক বছর আগে ২ জানুয়ারি শীতের রাতে একটি পাঁঠা চলে আসে বাবলুর বাড়ি। বাড়ির সামনেই ঘুরছিল সে। তখন তাকে উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে যান বাবলু। গত এক বছর ধরে বাবলুর বাড়ির বাসিন্দা সে। জানা যায়, তাকে বলি দেওয়ার জন্য আনা হয়েছিল। কোনও কারণে পালিয়ে যায় সে। নিঃসন্তান বাবলু এবং তাঁর স্ত্রী ওই ছাগলকে নিজেদের সন্তানের মতো বড় করেন। নাম রাখেন রাজা!
বৃহস্পতিবার সেই রাজারই জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করা হল বুনো কালীতলায়। বাবলুর বন্ধু সঞ্জীব ঘোষ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রতন পাসোয়ানেরা মিলে রাজার জন্মদিনের পরিকল্পনা করেন। পেশায় সকলেই দিনমজুর। বেলুন দিয়ে পাড়া সাজানো হয়। রাজাকে পরানো হয় নতুন জামাও। খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। ১৫০ জনকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল রাজার জন্মদিনে। রাতের মেনুতে ছিল ভাত, সব্জি দিয়ে ডাল, চিপ্স, মুরগির মাংস। শেষ পাতে চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি।
বাবলুর বন্ধু প্রসেনজিতের কথায়, ‘‘অনেকেই তো কুকুর, বিড়ালের মতো পোষ্যের জন্মদিন পালন করেন। আমরা ঠিক করি, যদি বাবলুর পোষ্য পাঁঠার জন্মদিন পালন করি, তবে কেমন হয়। সেই ভাবনা থেকেই পরিকল্পনা। এই উপলক্ষে নতুন বছরে একটু আনন্দ, খাওয়াদাওয়া হল একসঙ্গে।’’