রেলের তরফে জানানো হয়েছে, পাথর বাংলা থেকে নয়, ছোড়া হয়েছিল বিহার থেকে। ছবি: টুইটার।
পশ্চিমবঙ্গ নয়, বন্দে ভারতে পাথর ছোড়া হয়েছিল বিহার থেকে। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল পূর্ব রেল। গত দু’দিনে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়ার ঘটনায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এ বার সেই পাথর ছোড়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করল রেল। রেলের দাবি, হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়িগামী বন্দে ভারত ট্রেনের রেকে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, পাথর পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছোড়া হয়েছে। তবে রেলের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে, এই পাথর বাংলা থেকে নয়, ছোড়া হয়েছিল বিহার থেকে। বৃহস্পতিবার এই কথা জানান, পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী। সংবাদমাধ্যমে একলব্য বলেন, ‘‘পাথর বিহার থেকে ছোড়া হয়েছে। সেই ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। অভিযুক্ত ৪ ব্যক্তির গতিপ্রকৃতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, ওঁরা পাথর ছুড়তেই ওখানে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রতিটি কামরায় সিসিটিভি রয়েছে। সেখানেই এই ছবি ধরা পড়েছে।’’ সিসিটিভি ফুটেজে পাথর ছোড়ার সময় দেখেই এ বিষয়ে অনুমান করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বৃহস্পতিবার সকালে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে রেলের তরফে বিহারের প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানান একলব্য।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পাথর ছোড়ার ঘটনায় রাজ্য জিআরপি এবং রাজ্য পুলিশের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে রেল সুরক্ষা বাহিনী। অভিযুক্তদের খুঁজে বার করে গ্রেফতার করতে ইতিমধ্যেই তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও রেলের তরফে জানানো হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশকেও অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। এর পর কুমারগঞ্জ স্টেশনের কাছে পাথর ছোড়া হয় ট্রেনে। মঙ্গলবার নিউ জলপাইগুড়ি ঢোকার মুখেও ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে। ভেঙে যায় ট্রেনের বাইরের কাচ। ওই দু’টি ঘটনায় জিআরপির তরফেও তদন্ত শুরু হয়।
রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশকেও অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ছবি: টুইটার।
বুধবারই বিষয়টি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিলিগুড়ি জিআরপির সুপার এস সেলভামুরুগান। ওই এক্সপ্রেসের সুরক্ষায় বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
বৈঠকের পর তিনি জানান, বন্দে ভারতের সুরক্ষায় বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানানো হচ্ছে। সেই গ্রুপে থাকবেন উত্তরবঙ্গের প্রতিটি স্টেশনের জিআরপির আইসি এবং ওসি। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যে কোনও স্টেশন পেরোলেই সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের গতিবিধি এবং পরিস্থিতির কথা জানানো হবে সেই গ্রুপে। এ ছাড়াও এ বার আরপিএফের পাশাপাশি জিআরপিও থাকবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে। জিআরপির তরফে কয়েক জন পুলিশকর্মীও নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়া পর্যন্ত রওনা দেবেন। বন্দে ভারত এবং এর যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে করা এই বৈঠকের পর, বৃহস্পতিবার সকালেই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কথা জানাল রেল।