বিতর্ক: এমনই বহুতলের ভিড় বাড়ছে বৈদ্যবাটী শহরে। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক আবাসন মাথা তুলছে গঙ্গাপাড়ের শহর বৈদ্যবাটীতে। তাতে ক্ষতির বহর বাড়ছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। কারণ, অধিকাংশ ফ্ল্যাট-মালিক মিউটেশন করাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। ফলে, পুরসভার রাজস্ব আসছে না।
পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, এ শহরে বহুতলের সংখ্যা প্রায় ১১৪টি। তা থেকে কর ফাঁকি পড়ছে বছরে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। কর ফাঁকি দিয়ে পুর এলাকায় বসবাসকারীর সংখ্যা নেহাত কম নয় বলে মেনে নিয়ে কড়া হওয়ার বার্তা দিয়েছেন পুর প্রশাসক অরিন্দম গুঁইন। তিনি বলেন, ‘‘বহুতল নির্মাতাদের একাধিকবার মিউটেশন করাতে বলা হয়েছে। ফ্ল্যাটের মালিক এবং আবাসনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকেও নোটিস দেওয়া হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সও নেই। এ সব আর বরদাস্ত করা হবে না। যাঁরা কর ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কেন ফ্ল্যাট মিউটেশন হচ্ছে না?
পুরকর্তাদের একাংশ মনে করেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট-মালিকদের অনীহা রয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রোমোটারের সঙ্গে ফ্ল্যাট-মালিকের সমন্বয়ের অভাব ঘটছে। তদন্তে তাঁরা দেখেছেন, পুর এলাকায় ৫-১০ বছর বাস করছেন, এমন অনেক ফ্ল্যাট-মালিকও মিউটেশন করাননি। আবাসনের কোনও ফ্ল্যাটই মিউটেশন হয়নি, এমন উদাহরণ রয়েছে বলে তাঁদের দাবি।
মিউটেশন করাননি, এমন
অনেক ফ্ল্যাট-মালিকের আবার অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি বৈদ্যবাটী পুরসভা। রাস্তা, নিকাশি, পানীয় জল বা আর্বজনা সাফাই— সবই তাঁদের নিজেদের ব্যবস্থা করতে হয়।
এ অভিযোগ মানেননি পুরপ্রশাসক। তাঁর দাবি, ‘‘নিয়মিত বাঁশি বাজিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি-ফ্ল্যাট থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে আবর্জনা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নাগরিকদের।’’
পুরসভা অনুমোদিত প্ল্যান বহির্ভূত ফ্ল্যাট কিনে মিউটেশনের সমস্যা হওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি আবাসনের পরিচালন কমিটির সভাপতি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে ফ্ল্যাট কিনি। এই আবাসনে ১৪টি ফ্ল্যাট ও একটি দোকান ঘর আছে। এখনও পর্যন্ত কেউ মিউটেশন করাতে পারিনি। বহুবার বহুতল নির্মাতা ও পুর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। বহুতল নির্মাতা তাঁর বকেয়া কর মেটাননি। তিনি আমাদের কথা শুনছেন না।’’