ছাত্রদের বাড়িতে গিয়ে পড়ানো চলছে। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিকের টেস্টের ফল আশানুরূপ হয়নি। তবে, হাল ছাড়তে নারাজ বলাগড়ের জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছে, যে সব ছাত্রের ফল খারাপ হয়েছে, তাদের বাড়ি বাড়ি যাবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেখানেই তাদের পড়াবেন। যাতে মাধ্যমিকে তারা ভাল ফল করতে পারে। বৃহস্পতিবার থেকেই এই প্রচেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই ছাত্রদের মধ্যে কেউ কেউ পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারে সাহায্যের জন্য কাজও করে।
বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ নিয়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (বলাগড়) গৌরব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এগিয়ে এসেছেন। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে অন্যান্য স্কুলও বিষয়টি ভাবতে পারে।’’
এ দিন জিরাটের জনা ছয়েক ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে এক ঘণ্টা করে নানা বিষয়ে ক্লাস নেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষক আব্দুল শরিফ শেখ এবং স্কুল সভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও যান। প্রধান শিক্ষক জানান, আরও কিছু ছাত্রের বাড়িতে এ ভাবে যাওয়া হবে। আগামী ৫০ দিন ধারাবাহিক ভাবে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পালা করে ওদের বাড়ি গিয়ে ক্লাস নেবেন। এক দিনে একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকাও যেতে পারেন। যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকা স্থানীয় বাসিন্দা, প্রয়োজনে তাঁরা সন্ধ্যা বা রাতেও ক্লাস নিতে যাবেন। প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘এতে ছাত্রদের ভাল হবে।’’
স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, চলতি বছরে গরমের ছুটি প্রলম্বিত হওয়া, পঞ্চায়েত ভোট, এমন নানা কারণে অনেক বেশি ছুটি ছিল স্কুল। ফলে, অনেকেরই প্রস্তুতি কম হয়েছে। সেই কারণেই টেস্টের খাতা দেখার পরে সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের খামতি বুঝে তা পূরণ করার জন্যই তাদের বাড়িতে গিয়ে পড়ানোর ভাবনা।
ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এ ভাবে বাড়তি সময় দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অভিভাবকরা। এক অভিভাবক বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়িতে এলে ছেলেদের মনোবল বাড়বে। মাধ্যমিকে সুফল পাবে।’’ এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কথায়, ‘‘এখনও দেড় মাস সময় আছে। স্যর-ম্যাডামদের কাছে ভুল যথাসম্ভব শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব।’’