অয়ন শীলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের চয়নিকা আঢ্য। — নিজস্ব চিত্র।
চাকরি দুর্নীতিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হওয়া অয়ন শীল-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে হুগলির চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন চয়নিকা আঢ্য। তিনি জাতীয় স্তরের যোগাসন চ্যাম্পিয়ন এবং ভাল অ্যাথলিট হিসাবে পরিচিত। চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বরতলার বাসিন্দা চয়নিকা টিটাগড় পুরসভায় যোগ দিয়েছিলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে। তাঁর অভিযোগ, অয়নকে টাকা না দিতে পারায় সেই চাকরি আর করতে পারেননি তিনি।
চয়নিকার দাবি, ২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় পুরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, ইন্টারভিউয়ের পর চাকরিও হয়ে যায় তাঁর। ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর তাঁকে জয়েনিং লেটার দেওয়া হয় পুরসভার তরফে। চয়নিকার অভিযোগ, বৈধ উপায়ে চাকরি পেলেও তাঁর থেকে ৫ লক্ষ টাকা চান অয়ন। তা না দেওয়াতেই চাকরি করা সম্ভব হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এ নিয়ে সোমবার চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন চয়নিকা। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপির আইনজীবী সেল। গত ১ এপ্রিল বিজেপি আইনজীবী সেলের প্রতিনিধি দল তাঁর বাড়িতে গিয়ে আইনি সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দেয়। সোমবারও চয়নিকার সঙ্গে ছিলেন বিজেপির আইনজীবী সেলের সদস্যরা।
অভিযোগপত্রে চয়নিকা লিখেছেন, ‘‘আমি টিটাগড় পুরসভায় মজদুর হিসাবে ২০১৯ সালে নিয়োগপত্র পাই। আমি টিটাগড় পুরসভায় সমস্ত নথি এবং প্রকৃত কাগজপত্র যাচাই করানোর জন্য চিঠি প্রদান করি। পরবর্তীকালে আমার সমস্ত নথি যাচাই করে আমাকে টিটাগড় পুরসভার মজদুর হিসাবে নিয়োগ করা হয়। নিয়োগ করার সময় আমার নামে পুরসভার নির্দেশমতো অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কে স্যালারি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, আমি টিটাগড় পুরসভায় স্যানিটারি ইনস্পেক্টর বিশ্বাস বাবুর কাছে বেশ কিছু দিন কাজও করি।’’ চয়নিকার অভিযোগ, টিটাগড় পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী তাঁকে কাজে আসতে বারণ করেন। মানস সেন নামে এক পুলিশ কর্মী তাঁর বাড়িতে গিয়ে অয়নের সঙ্গে দেখা করতে বলেন বলেও অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন চয়নিকা। তাঁর অভিযোগ, যোগাযোগ না করলে চাকরি থাকবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। অয়ন শীল তাঁর থেকে চাকরির জন্য ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন চয়নিকা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আবেদন করেছেন তিনি।
চয়নিকার অভিযোগ পাওয়ার পর চুঁচড়া থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ঘটনা যে থানার আওতায় ঘটেছে অর্থাৎ সেই টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে। চয়নিকার আইনজীবীকে ডেকে সেই পরামর্শ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অয়ন শীল বাম আমলে তৈরি হয়েছে। ও সেই সময়েই চাকরি পেয়েছে। সেই সময় থেকেই ও এই সব দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এই সব লোক আমাদের সময়েও ঢুকে পড়েছে। আদালতে এর বিচার চলছে। দলের অবস্থায় স্পষ্ট, কেউ দোষী হলে তাঁকে রেয়াত করা হবে না।