—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উত্তরপাড়া, কোন্নগর, তারকেশ্বরের পরে এ বার বৈদ্যবাটী। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর হত্যা ও ধর্ষণ কাণ্ডের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল হুগলি জেলার আরও এক পুজো কমিটি। বৈদ্যবাটী পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নবগ্রাম সদগোপপাড়ার মহিলা মিলন চক্র পুজো কমিটির তরফে লিখিত ভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
আর জি করের ঘটনায় সামাজিক অভিঘাতের জেরে পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ অনুদান নেওয়া সমীচীন মনে করছেন না। এর আগে উত্তরপাড়া শহরের তিনটি, কোন্নগর এবং তারকেশ্বর পুর এলাকার একটি করে পুজো কমিটি ওই অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল।
জানা গেল, মহিলা মিলন চক্রের পুজো সাড়ে দিন দশকের বেশি পুরনো। বিগত বছরগুলিতেও তারা সরকারি অনুদান পেয়েছে। ওই পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে পাড়ার মহিলাদের নিয়ে বৈঠকে এ বার অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্তের কথা সোমবার লিখিত ভাবে মহকুমাশাসকের (শ্রীরামপুর) দফতরে জমা দেওয়া হয়। ডাকযোগে প্রতিলিপি পাঠানো হয় চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার এবং শ্রীরামপুর থানার আইসি-কে।
প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, পুজো কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁদের কোনও বক্তব্য নেই। ওই চিঠি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুজো কমিটির তরফে সভাপতি তপতী মুখোপাধ্যায় এবং সম্পাদক বর্ণালী বন্দ্যোপাধ্যায় পালের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সংগঠিত ভাবে ওই চিকিৎসক তরুণীকে নৃশংস খুনের ঘটনা তাঁদের ভয়ঙ্কর মানসিক আঘাত দিয়েছে। সারা বিশ্বে হাসপাতালকে সব থেকে সুরক্ষিত স্থান মনে করা হয়। সেখানে এই হত্যা মহিলা হিসাবে শুধু নন, মানুষ হিসাবেও তাঁরা মানতে পারছেন না। এত দিনেও প্রকৃত খুনিরা ধরা না পড়া তাঁদের অবাক করেছে। তাঁরা প্রকৃত দোষীদের দ্রুত শাস্তি দাবি করছেন। এর পরেই লেখা হয়েছে, এই কারণেই সর্বসম্মতিক্রমে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ বার সরকারি অনুদান নেওয়া হবে না।
গত বছর অনুদান ছিল ৭০ হাজার টাকা। এ বার বেড়ে ৮৫ হাজার টাকা হয়েছে। অনুদান না নিলে পুজোর আয়োজনে কতটা প্রভাব পড়বে? মহিলা পরিচালিত এই পুজোর উদ্যোক্তারা মনে করছেন, কোনও প্রভাব পড়বে না। তাঁদের বক্তব্য, গত কয়েক বছরে অনুদান পাওয়ায় সে ভাবে চাঁদা তোলা হত না। এ বার হবে। বৈঠকে আসা পাড়ার মহিলাদের তরফে এ ব্যাপারে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলেছে।