হাওড়ার লিলুয়ার চকপাড়ার এই বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে আগুন লেগে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল জামাই ও শাশুড়ির। —নিজস্ব চিত্র।
হাওড়ার লিলুয়ার চকপাড়ায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি একটি বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে আগুন লেগে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল জামাই ও শাশুড়ির। অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ও পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বৃদ্ধার মেয়ে। এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও কিনারা
হয়নি সেই রহস্যের। কিন্তু এরই মধ্যে সোমবার মৃত্যু হল বৃদ্ধার সেই মেয়ে কমলা সানার (৪৫)। এই ঘটনার পরে এ দিন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রতিবেশীরা। পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যেই ওই পোড়া বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বোঝা যাবে, কী কারণে আগুন লেগেছিল।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে লিলুয়ার চকপাড়ার নতুনপল্লির একটি বাড়িতে আগুন লাগে। সেই ঘটনায় পুড়ে মারা যান বৃদ্ধা আঙুরবালা দলুই (৮৫) ও তাঁর জামাই
মধুসূদন সানা (৬০)। অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বৃদ্ধার মেয়ে কমলা। এ দিন তিনিও মারা যান। সেই খবরে নতুনপল্লিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরে পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত না করায় এই মৃত্যু-রহস্যের কিনারা হয়নি। প্রসূন কর নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘গভীর রাতে ঘরের ভিতরে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে
গিয়ে তিন জনের মৃত্যুর এই ঘটনা রহস্যে ঘেরা। এই ঘটনার তদন্ত পুলিশ কেন ঠিক মতো করছে না, তা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের অবশ্য দাবি, ঘটনার পরের দিনই ওই পোড়া বাড়ি থেকে যাবতীয় নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তবে, ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘আশা করা যায়, দু’-এক দিনের মধ্যেই রিপোর্ট আসবে। তার পরেই পরিষ্কার হবে, আগুন লেগে গিয়েছিল, না লাগানো হয়েছিল। তার আগে তদন্ত এগোবে না।’’
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পোড়া বাড়িটির ঠিক পিছনেই সম্প্রতি একটি পুকুর বোজানো হয়েছে। সেখানে প্রোমোটিং হওয়ার কথা। সেই কারণে জমি দখল করতেই জমি-মাফিয়ারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সে বিষয়ে যথাযথ তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা।