মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আগেই দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে হুগলির উত্তরপাড়ার শক্তি সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাব। এ বার উত্তরপাড়ারই আরও একটি পুজো কমিটি দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদানে ‘না’ বলে দিল। তাদের দাবি, আগে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের বিচার হোক। তার পর উৎসবের জৌলুস নিয়ে চিন্তা করা যাবে। বস্তুত, শুধু সরকারি ৮৫ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান নয়, আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ বার পুজোয় আড়ম্বরও কম হবে বলে জানাচ্ছে ওই পুজো কমিটি।
উত্তরপাড়ার জয়কৃষ্ণ স্ট্রিটের ‘আপনাদের দুর্গাপুজো’ বেশ পুরনো। সরকারি অনুদানও পেয়ে এসেছে এই পুজো কমিটি। তবে সম্প্রতি সভা ডেকে ওই পুজো কমিটির সদস্যেরা সহমত হয়েছেন যে, এ বার অনুদান গ্রহণ করবেন না। তাঁদের কথায়, ‘‘আরজি করে চিকিৎসককে যে ভাবে নির্যাতন করে মারা হয়েছে, তার প্রতিবাদে শুধু সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যানই নয়, এ বছর পুজোর জাঁকজমকও কমিয়ে দিচ্ছি আমরা।’’
সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির সদস্য প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আরজি করে চিকিৎসকের হত্যাকারীদের শাস্তি চাই। রাজ্য, দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এই ঘটনার প্রতিবাদ চলছে। আরজি করের ঘটনা ন্যক্কারজনক। সেখানে আমরা চুপ করে বসে থাকি কী করে! আমরাও প্রতিবাদ জানালাম অনুদান প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে।’’ পুজো কমিটির অপর এক সদস্য সীমা চট্টোপাধ্যায় জানান, ধর্ষিতা এবং মৃতা চিকিৎসকের বয়সি তাঁর মেয়ে রয়েছে। এমন জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদ নানা স্তরে প্রতিবাদ হচ্ছে। তাঁরাও বিচার চাইছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি গর্বিত যে, আমাদের পুজো কমিটি অনুদান না-নেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে।’’
‘আপনাদের দুর্গাপুজো’র এ বার ৮০ বছরে পদার্পণ করেছে। সদস্যরা জানাচ্ছেন, আগেও তো অনুদান ছাড়াও পুজো হয়েছে। অসুবিধা হবে ঠিকই, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত তাঁদের নিতেই হত।
সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান করে শক্তি সঙ্ঘ সমাজমাধ্যমে বার্তা দেয়, ‘মেয়ের বিচার দিন, মায়ের পুজো নিজেরা বুঝে নেব।’ ওই পোস্ট ভাইরাল হয়। অনেক পুজো কমিটি শক্তি সঙ্ঘের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে একই ভাবে প্রতিবাদ জানানোর কথা ভাবছে। যদিও উত্তরপাড়ার আর একটি পুজো কমিটি ইতিমধ্যে হুগলির জেলাশাসককে অনুদান প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে।