বেআইনি: রাস্তার পাশে পড়ে নির্মাণ সামগ্রী। তার ফলে আরও সঙ্কীর্ণ হয়েছে রাস্তা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
সাঁতরাগাছি সেতুর মেরামতির কাজ শুরু হলে যানজট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। তা ঠেকাতে পরিকল্পনা হয়েছিল ওই কাজ শুরুর আগেই বিকল্প রাস্তা হিসাবে আন্দুল রোড চওড়া করা হবে। বকুলতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মৌরিগ্রাম পর্যন্ত বেদখল হয়ে থাকা ওই রাস্তার ধারের দখলদার হটানো হবে। কিন্তু পরিকল্পনাই সার। সাঁতরাগাছি সেতু বন্ধের এক সপ্তাহ আগেও ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির দু’পাশ দখলমুক্ত হয়নি। ফলে চওড়া করার কোনও উপায় নেই। বরং আন্দুল রোড পুরো মেরামত না করে কয়েক জায়গায় তাপ্পি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সেতুর কাজ শুরু হলেই আন্দুল রোডে রাতদিন তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছে পুলিশ প্রশাসন।
আগামী সপ্তাহ থেকে সাঁতরাগাছি সেতুর সব ক’টি এক্সপানশন জয়েন্ট পাল্টানোর জন্য অর্নিদিষ্টকাল সেতুর লেন বন্ধ রাখা হবে। বন্ধ থাকবে ভারী গাড়ি ও অয়েল ট্যাঙ্কারের মতো গাড়ির চলাচল। বিকল্প রাস্তা হিসাবে আন্দুল রোড দিয়ে সেই সব গাড়িগুলি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।
শনিবার সেই আন্দুল রোডে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার দু’পাশে ইট-বালির স্তূপ এবং খোয়া পড়ে রয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায়ীরা রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছেন। যার ফলে সঙ্কীর্ণ রাস্তা আরও অপরিসর হয়েছে। এমনকি ফুটপাতের এক এক জায়গায় স্তূপীকৃত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা পড়ে রয়েছে। এমনই এক নির্মাণ ব্যবসায়ী স্বপন মালাকারের দাবি, ‘‘গত ৩৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কারও কোনও সমস্যা হয়নি। পুলিশ-পঞ্চায়েত সব জানে।’’
এলাকার দীর্ঘদিনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের এক ভাই নিজে রাস্তার উপরে নির্মাণ সামগ্রী রেখে গোলা চালান। একটি ক্লাব বেআইনি ভাবে রাস্তা দখল করে বাজার বসিয়ে তোলা তোলে। সরকারি রাস্তায় হোর্ডিং ভাড়া দিয়ে টাকা তোলে একটি চক্র। সবটাই এলাকার বাসিন্দারা জানেন। কিন্তু সাহস করে কেউ প্রতিবাদ করেন না।’’
অথচ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের পর গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা দিয়ে সারাদিনে হাজার হাজার গাড়ি যায়। মৌরিগ্রাম ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের কয়েকশো ট্যাঙ্কার চলে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, রাস্তা বেদখল হওয়ার জন্য যে রাস্তায় নিত্যদিন যানজট হয়, সাঁতরাগাছি সেতু বন্ধ হলে সেই পথ দিয়ে ভারী গাড়ি গেলে মানুষের যাতায়াত করাই কঠিন হয়ে যাবে।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘বিষয়টা আমাদেরও ভাবাচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে রাস্তা চওড়া করতে হকারের দখলমুক্ত করার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে যানজটের আশঙ্কা তো থেকেই যাচ্ছে।’’