arrest

Arrest: মেয়ে সেজে ‘দখল’ আশ্রয়দাতার জমি

এর পরেই ইনজামুলরা ওই দফতরে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে প্রথমে বলা হয়, আবদুর ওই জমি ‘মেয়ে’ জরিনাকে দান করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জাঙ্গিপাড়া শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২২ ০৬:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক ব্যক্তি নিজের জমিতে আশ্রয় দিয়েছিলেন এক মহিলাকে। তাঁর মেয়ে সেজে জালিয়াতি করে সেই জমি নিজের নামে করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই মহিলার বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁকে এবং তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। জাঙ্গিপাড়ার লক্ষ্মণপুরের ঘটনা। ধৃতদের নাম জরিনা বেগম এবং শেখ মেজারুল ওরফে ভূষণ। শ্রীরামপুর আদালতের নির্দেশে জাঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছে।

Advertisement

অভিযোগকারী আবদুর রহমানের পরিবারের লোকজনের দাবি, জরিনা বেশ কয়েক বছর ধরে স্বামী, শাশুড়ি, সন্তানদের নিয়ে আবদুরের জমির একাংশে থাকেন। গত মার্চ মাসে আবদুরের ছেলে শেখ ইনজামুল জানতে পারেন, ওই অংশের চার শতক জমির ‘মালিক’ হয়ে গিয়েছেন জরিনা। ভূমি দফতরে ওই সম্পত্তি জরিনার নামে রেকর্ড হয়েছে।

এর পরেই ইনজামুলরা ওই দফতরে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে প্রথমে বলা হয়, আবদুর ওই জমি ‘মেয়ে’ জরিনাকে দান করেছেন। পরে, তথ্য ঘেঁটে জালিয়াতির ঘটনা সামনে আসে। আবদুর পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ পদক্ষেপ না করায় তিনি শ্রীরামপুর আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে গত এপ্রিল মাসে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। সরকারি রেকর্ড জালিয়াতি, ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা তথ্য দাখিল, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র প্রভৃতি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। দিন কয়েক আগে অভিযুক্ত দম্পতি গ্রেফতার হয়। তারা জেল হেফাজতে রয়েছে।

Advertisement

অভিযোগকারীর আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা যে দলিল জাল করেছেন, তাভূমি দফতরের রিপোর্টেই স্পষ্টহয়ে গিয়েছে।’’

দলিলে দেখা যাচ্ছে, জরিনার ‘বাবা’ আবদুর। তিনি জরিনাকে ওই চার শতক জমি দান (গিফ্‌ট ডিড) করেছেন। সেই দলিল হয়েছে ১৯৯৬ সালের ২১ অক্টোবর। দলিলে আবদুর অর্থাৎ দাতাকে শনাক্ত করেছেন মেজারুল। রবীন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, যে দিন জমি রেকর্ড হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে, সেই দিন ছিল দুর্গাপুজোর নবমী। অর্থাৎ, সরকারি ছুটির দিন। ফলে, ওই দিন সরকারি দফতরে জমি রেকর্ডের প্রশ্নই নেই। দ্বিতীয়ত, জরিনার আধার কার্ডে রয়েছে, তাঁর বাবার নাম কুরবান মল্লিক। অর্থাৎ, আবদুর তাঁর বাবা নন। জাঙ্গিপাড়া রেজিস্ট্রি অফিসে জরিনাদের নামে ওই জমির রেজিস্ট্রি নেই, তা ভূমি দফতরের রিপোর্টেই আছে।

আবদুরের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, ঘটনার পিছনে জালিয়াত চক্র রয়েছে। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, পিছনে কেউ না থাকলে শুধুমাত্র এক দম্পতির পক্ষে নথিপত্র নকল করা সম্ভব নয়। সরকারি দফতরের লোকজনের যোগসাজশ আছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। ঘটনার পিছনে জড়িতদের কেন ধরা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও উঠছে। পুলিশ এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন বলে তারা এড়িয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি আদালত তদন্তকারী অফিসারের কাছে ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। তদন্তকারী অফিসার সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

ইনজামুল বলেন, ‘‘বাবা আমাদের জমিতে জরিনাদের থাকতে দিয়েছিল। ভাড়াও নেওয়া হয় না। ওরাপ্রতারণা করবে, কল্পনার অতীত। ওদের পিছনে লোক আছে। ওদের দলিল যে জাল, ভূমি দফতর জানিয়ে দিয়েছে। সমস্ত জাল নথি বাতিল হোক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এটাই চাই। আদালতের উপরে ভরসা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement