ব্যবহার করা হয়েছিল এই বাইক। নিজস্ব চিত্র
হুগলির পান্ডুয়ার সারদাপল্লিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালিক মনোরঞ্জন সাহার আড়াই বছরের ছেলেকে অপহরণে ব্যবহৃত মোটরবাইকটি অন্যতম অভিযুক্ত শুভাশিস ত্রিবেদীর বাড়ি থেকে মঙ্গলবার উদ্ধার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, বাইকটি শুভাশিসের বাবার। তাতে চেপেই শুভাশিস এবং তার স্ত্রী সুস্মিতা শিশুটিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। বাইকে একটি মানবাধিকার সংস্থার নাম লেখা। জানা গিয়েছে, শুভাশিসের বাবা ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। যে মোবাইল ফোন থেকে মুক্তিপণের টাকা চেয়েছিল অপহরণকারীরা, বৈঁচীর বেরেলা এলাকার একটি পুকুর থেকে সেটিও এ দিন উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুভাশিস-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে সোমবার সকালে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। সুস্মিতাও গ্রেফতার হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
জেরায় তদন্তকারীরা জেনেছেন, মূল অভিযুক্ত নবেন্দু ঘোষ ছ’মাস আগে শিশুটিকে অপহরণের ছক কষে। সে মনোরঞ্জনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মী। সহকর্মী সুমন ধোলে, রতন ক্ষেত্রপাল এবং সুদীপ ভট্টাচার্যকে সে কাজে লাগায়। শুভাশিসের কম্পিউটার ব্যবসা রয়েছে। সেই সূত্রে নবেন্দুর সঙ্গে তাদের আলাপ ছিল। শুভাশিস-সুস্মিতাকেও শামিল করা হয় পরিকল্পনায়। সেই অনুযায়ী, ৯ মে দুপুরে সুমন শিশুটিকে বাইকে চাপিয়ে ঘুরতে বেরোয়। শুভাশিস-সুস্মিতা তাকে নিয়ে যায়। মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তবে ছেলেটিকে খুঁজতে পুলিশি তৎপরতায় তাদের ছক বানচাল হয়ে যায়। মুক্তিপণ বাবদ এক কোটি টাকা মনোরঞ্জনের কাছে চাইলেও তার অপেক্ষা না করে ছেলেটিকে রাস্তায় পাওয়া গিয়েছে বলে দু’ঘণ্টার মধ্যেই নতুন নাটক সাজায়। শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
পোলবার সুলতানগাছার বাসিন্দা, বছর পঁয়ত্রিশের নবেন্দু দর্শনে এমএ পাশ। কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েও পড়াশোনা করেছে। মনোরঞ্জন ব্যবসার কাছে বেশির ভাগ সময়ে বাইরে থাকেন।পান্ডুয়ায় তাঁর ব্যবসা মূলত নবেন্দুই দেখভাল করত। পুলিশের দাবি,জেরায় নবেন্দু জানিয়েছে, মনোরঞ্জনের সংস্থায় কাজের পাশাপাশি সে সুদের ব্যবসাও করে। তাতে প্রচুর দেনাহয়ে গিয়েছিল। দেনা শোধ করতেই ওই পরিকল্পনা করে। নবেন্দুরনিজের দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে। শুভাশিস-সুস্মিতার আড়াই বছরের একটি ছেলে আছে। শুভাশিসেরবাবা আশিস ত্রিবেদী বলেন, ‘‘ছেলে-বৌমা অন্যায় করে থাকলেশাস্তি হোক।’’