—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাম আমলে পাট্টা পাওয়া জমি জোর করে দখলের অভিযোগ উঠল শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে। হুগলির শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মিলনগড় এলাকার ঘটনা। মৃত্যুঞ্জয় হাওলাদার নামে স্থানীয় এক চাষির অভিযোগ, শাসকদলের নেতারা জমি জোর করে দখল করে তাঁদের ঘনিষ্ঠ লোকজনদের লিজ়ে দিয়ে তা থেকে মুনাফা লুটছেন। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও ফল হয়নি বলে দাবি মৃত্যুঞ্জয়ের।
শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি জমি পাট্টা পেয়ে থাকলে তা জোর করে নেওয়া যায় না। পঞ্চায়েতে একটি চিঠি পেয়েছি। দলের লোকেরা জড়িত আছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক কলিম আনসারি বলেন, “ওই জমি মৃত্যুঞ্জয় হাওলাদারের নামেই রেকর্ডে দেখাচ্ছে। এরপরে যা করার পুলিশ করবে।” বিডিও (বলাগড়) সুপর্ণা বিশ্বাস জানান, লিখিত অভিযোগ হয়েছে কি না দেখে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বর্তমানে মৃত্যুঞ্জয়ের জমিতে চাষ করছেন হরিচাঁদ বাড়ুই। এই জমি মৃত্যুঞ্জয়ের কি না এবং এই জমি তাঁকে কারা দিয়েছেন— এ প্রশ্নের উত্তর দেননি হরিচাঁদ।
মৃত্যুঞ্জয়ের অভিযোগ, “বছর চল্লিশ আগে সরকার প্রায় এক বিঘা জমির পাট্টা দিয়েছিল। তখন থেকে চাষ করছি সেখানে। ২০১৭ সাল নাগাদ নিয়োগ দুর্নীতিতে হাজতে থাকা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু
স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দিয়ে
আমার সেই জমি জোর করে কেড়ে নিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ওই সময়ে কিছু চাষি অভিযোগ করেছিলেন। তৃণমূল নেতারা
হুমকি দেওয়ায় কেউ পরে আর উচ্চবাচ্য করেননি। প্রশাসনও আর ব্যবস্থা নেয়নি।
মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী রিক্তা বিজেপি নেত্রী। তিনি বলেন, “এক দিন জমিতে গিয়েছিলাম। তৃণমূল নেতাদের হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। চলতি মাসে ফের শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েত, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, বিডিও, পুলিশকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ এসে ওদের জমি ছাড়তে বললেও ওরা গা-জোয়ারি করছে। বিজেপি করি বলে জমি বেহাত হবে, তা মানবো না।”
বিজেপির জেলার কিসান মোর্চার সভাপতি সমীর হালদার বলেন, “মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী বিজেপি করেন বলে ওঁদের জমি কেড়ে নিয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে জানাবো। কাজ না হলে চাষিদের সংগঠিত করে আন্দোলনে নামা হবে।”
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অতনু ঘোষ বলেন, “বাম আমলে ওই জমি পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। ওরা যা করছে, তা চলতে পারে না। আমরা আন্দোলন করব।”