বৈদ্যবাটী পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এই জলাশয় ভরাট করা নিেয়ই অভিযোগ। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
বেআইনি ভাবে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর। বৈদ্যবাটী পুরসভায় মঙ্গলবার এই মর্মে লিখিত অভিযোগ করলেন স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর তথা বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘ওই অভিযোগ পেয়েই পুরসভার তরফে জলাশয়টি পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুকুর বোজাতে আমরা দেব না।’’ পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, দিন কয়েক আগে পুকুরটি ভরাট বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তার পরেও ওই কাজ থামেনি।
পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জিটি রোড লাগোয়া ওই পুকুরটি পুরভবন এবং শেওড়াফুলি ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জিটি রোডের ধারে। বেশ কিছু দিন ধরে বালি ফেলে সেটি ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর নমিতা মাহাতোকে বিষয়টি জানান। নমিতার স্বামী পিন্টু মাহাতো পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ডাম্পারে বালি ফেলা হচ্ছে। পাম্প চালিয়ে জল বের করে পুরসভার নিকাশি নালায় ফেলা হচ্ছে। বিষয়টি তিনি বিধায়ককে জানান। বিধায়ক পুলিশ ডাকেন। পুলিশ গিয়ে দু’জনকে আটক করে। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা ব্যবস্থা নেওয়ার পরে কয়েক দিন কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে ফের বালি ফেলা হয়। সেই খবর পেয়ে এ দিন সকালে পিন্টু ফের সেখানে যান। তার পরেই নমিতা পুরসভায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার পিন্টু বলেন, ‘‘আগের দিন কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও আজ গিয়ে পরিষ্কার বুঝতে পারি, আরও বালি ফেলা হয়েছে।’’
পুর-কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও স্থানীয় অনেকেই পুরসভা বা প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে ভরাটকারীদের যোগসাজসের অভিযোগ তুলছেন। এ ব্যাপারে অরিন্দমবাবুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পুকুর বোজানো যাবে না। আমরা পুকুর বোজানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পুকুর সংস্কারও করছে পুরসভা। নিন্দুকেরা সব কাজেই বিরোধিতা করেন।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই জলাশয় অরুন্ধতী আঢ্য ও গীতারানি আঢ্যের নামে নথিভুক্ত রয়েছে। এ দিন বিধায়ক তাঁদের এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, পুকুরটি তাঁরা বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই জলাশয়ের সঙ্গে এক প্রোমেটারের যোগ রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ওই প্রোমোটারের দাবি, সেটি বাস্তু জমি। জায়গাটি নিচু হওয়ায় বালি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। কোনও জলাশয় বোজানো হয়নি।
স্থানীয় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে জলাশয় ভরাটের নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’