বেআইনি ভাবে গাছ কাটায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা
Trees

‘গাছ কাটতে অনুমতি লাগে জানতাম না’

পুলিশ এসে কাটা গাছ, গাছ কাটার সরঞ্জাম-সহ যারা গাছ কাটছিল, তাদের ৪ জনকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

খানাকুল শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২১ ০৭:০১
Share:

কুকীর্তি: এই গাছই কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির তদারকিতে থাকা স্থানীয় অনন্তনগরে গাঁধী আশ্রম সংলগ্ন সংশ্লিষ্ট ট্রাস্টের জায়গায় লাগানো গাছ কাটার অভিযোগ উঠল স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে প্রায় শ'দেড়েক গাছ কাটা হয়ে গেলে বিষয়টা স্থানীয় মানুষের নজরে আসে। তারপরই খানাকুল ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য শেখ রহমত আলি খানের বিরুদ্ধে বিডিও তথা পঞ্চায়েত সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানান স্থানীয়রা।

Advertisement

পুলিশ এসে কাটা গাছ, গাছ কাটার সরঞ্জাম-সহ যারা গাছ কাটছিল, তাদের ৪ জনকে গ্রেফতার করে। খানাকুল-১-এর বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্রাস্টের জায়গাটি পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে আছে। সেখানে গাছ কাটা নিয়ে গ্রামবাসীদের গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ পুলিশকে পাঠিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ জানায়, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মূল অভিযুক্তর খোঁজ চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন-আইনের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির লাগানো গাছ, নিজে লাগিয়েছেন বলে দাবি করে কাটতে শুরু করেছিলেন রহমত আলি খান নামে ওই ব্যক্তি। এলাকাটি খানাকুল ১ পঞ্চায়েতের অধীন। বেআইনি গাছ কাটা নিয়ে প্রধান গৌতম হাজরা বলেন, ‘‘আমার আমলে সেখানে গাছ লাগানো না হলেও আগের পঞ্চায়েত বোর্ড এবং তারও আগে পঞ্চায়েত থেকে সেখানে বৃক্ষরোপণ হয়েছিল বলে শুনেছি। বিষয়টি ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ দেখছে।’’

Advertisement

অভিযুক্ত রহমত আলি খান বলেন, ‘‘একটা গাছও পঞ্চায়েত সমিতি বা পঞ্চায়েতের লাগানো নয়। ট্রাস্টের অস্তিত্ব না থাকায় প্রায় ৩৮ একর জায়গাটা বেদখল হয়ে যাচ্ছিল। ইতিমধ্যে ওই জায়গায় খান ৯০টা বাড়িও হয়েছে। জায়গাটা বাঁচাতেই আমি আমার নিজের টাকা খরচ করে আম, পেয়ারা, সবেদা-সহ বিভিন্ন ফলের প্রায় ২৮ হাজার গাছ লাগিয়েছি। সেই সব গাছের বেশ কিছু ঘন হয়ে যাওয়ায় এবং ভেঙে পড়ায় কিছু গাছ কাটা হচ্ছিল।’’ পঞ্চায়েত সমিতি এবং বন দফতরের অনুমতি নেওয়া প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘নিজের লাগানো গাছ কাটতে কারও অনুমতি নিতে হবে বলে আমার জানা ছিল না।’’ অভিযুক্তের ছেলে তথা সংশ্লিষ্ট বুথের পঞ্চায়েত সদস্য মানোয়ার আলি খান বলেন, ‘‘বাবা কী করেছেন, আমার
জানা নেই।’’

পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নইমূল হকের অভিযোগ, ‘‘দলের নামে মাত্রাছাড়া অনিয়ম করে চলেছেন আমাদেরই কিছু লোক। গাছ বাঁচাতে স্থানীয় মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন। বিষয়টা দলের উপরের নেতৃত্বকেও জানানো হবে।’’

বন দফতরের আরামবাগ চাঁদুর রেঞ্জার রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গাছ কাটায় আমাদের কাছে কোনও বৈধ অনুমতি নেওয়া হয়নি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement