Trees

TMC: অরণ্য সপ্তাহেই কোপ গাছে, অভিযুক্ত প্রধান

গাছ কাটা নিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন দলের নেতা এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের বড় অংশও।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

গোঘাট শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২১ ০৯:৩৪
Share:

রবিবার ট্রাক বোঝাই কাটা গাছগুলো আটক করল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

‘অরণ্য সপ্তাহ’ চলছে। সেই উপলক্ষে রাজ্যজুড়ে গাছ লাগানো চলছে। এর মধ্যেই রবিবার নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বেশ কিছু ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে বিক্রিতে মদত এবং যোগসাজশের অভিযোগ উঠল গোঘাটের তৃণমূল পরিচালিত শ্যামপুর পঞ্চায়েতের প্রধান গিয়াসুদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীরা অবশ্য কাটা গাছ লরিতে পাচার করার সময় আটকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।

Advertisement

শুধু গ্রামবাসীরাই নন, আন্দুয়া গ্রাম সংলগ্ন কংসাবতী খালের দু’পাড় থেকে ওই গাছ কাটা নিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন দলের নেতা এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের বড় অংশও।

প্রধান অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, “আমাকে মিথ্যা জড়ানো হচ্ছে। ‘হাতেগোনা কয়েকটা গাছ কাটা নিয়ে অযথা আমাদেরই দলের কিছু নেতাও শোরগোল করছেন। ওই গাছ পঞ্চায়েত থেকে লাগানো হয়নি। যে সব গ্রামবাসী লাগিয়েছিলেন, তাঁরাই চাষের অসুবিধা হওয়া কেটেছেন।” চাষিদের পাল্টা দাবি, প্রধান মিথ্যা বলছেন। বেআইনি ভাবে গাছ কাটার বিরুদ্ধে তাঁরাই প্রতিবাদ করেছেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, লরি-সহ কাটা গাছ আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিষয়টা বন দফতরকে জানানো হয়েছে। যে জায়গার গাছ কাটা হয়েছে, সেটি সেচ দফতরের। বন দফতররের আরামবাগ রেঞ্জ অফিসার রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জায়গা বা গাছের মালিকানা যাঁরই হোক, আমাদের কাছে অনুমতি নিতে হবে। ওই সব গাছ কাটা নিয়ে আমাদের কাছে অনুমতি নেওয়া হয়নি। তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ করা হবে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে আন্দুয়া গ্রাম সংলগ্ন কংসাবতী খালের দু’পাড় বরাবর ওই সব গাছ কাটা হচ্ছিল। মাঠে কাজ করতে যাওয়া মানুষরা প্রতিবাদ করলে গাছ কাটতে আসা লোকেরা জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত থেকেই সেই সব গাছ কাটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামবাসীরা রাতে উপপ্রধান শিবানী নন্দীর কাছে জানতে পারেন পঞ্চায়েত বিষয়টা নিয়ে অন্ধকারে। তারপরেই এ দিন সকালে কাটা গাছ পাচারের
সময় গ্রামবাসীরা শান্তিপুর মোড়ে সেই লরি আটক করেন।

ওই অঞ্চলেরই বাসিন্দা তথা তৃণমূলের কিসান সংগঠনের গোঘাট-২ ব্লক সভাপতি নিতাই নন্দীর অভিযোগ, “বাম আমলে বনসৃজন প্রকল্পে লাগানো হয়েছিল ওই সব গাছ। বামফ্রন্ট চলে যাওয়ার মুখে অধিকাংশ গাছ লুটপাট হয়ে গেলেও কিছু আমরা রক্ষা করতে পেরেছিলাম। এখন সেই সব গাছও খোদ প্রধানের মদতে লুটপাট করার বিষয়টা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”

উপপ্রধান শিবানী বলেন, “গাছ কাটা নিয়ে পঞ্চায়েতে কোন আলোচনা বা অনুমতি নেওয়া হয়নি।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তপন মণ্ডল বলেন, “অরণ্য সপ্তাহ চলাকালীন আইন মেনে গাছ কাটা হলেও তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমার মনে হয়েছে। আইনি-বেআইনি যা-ই হোক, এই কাজের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সমস্ত ঘটনা আমি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement