কয়েক জন পদস্থ কর্তা ও পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বারংবার হাট থেকে টাকা তোলার অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার মঙ্গলাহাটে যে নানা ভাবে তোলাবাজি চলে, সেই অভিযোগ একাধিক বার উঠেছে। ওই হাটের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বার বার তোলাবাজ দমনে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। কিন্তু এ বার তোলাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে আস্ত একটি থানার ‘কাজকর্ম’ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিলেন নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী। এমনটাই সূত্রের খবর। যদিও নগরপাল সে কথা সরাসরি স্বীকার করেননি। এর পাশাপাশি, ওই থানার এক কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ় করা হয়েছে কাজে গাফিলতির অভিযোগে। মঙ্গলাহাট হাওড়া থানা এলাকায় পড়ে। ওই থানার কয়েক জন পদস্থ কর্তা ও পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বারংবার হাট থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণেই তদন্তের এই সিদ্ধান্ত বলে পুলিশের একাংশের ধারণা।
সম্প্রতি মঙ্গলাহাটের হকারদের নামে গড়ে তোলা একটি সংগঠন ব্যবসায়ীদের থেকে তোলা তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যবসায়ীদের দাবি, গত ৩০-৩৫ বছর ধরে তাঁরা মঙ্গলাহাটে অন্য ব্যবসায়ীদের ডালা ভাড়া দিচ্ছেন। এখন সেই ডালা ভাড়া দিতে স্থানীয় থানা ও শাসকদলের নেতাদের মোটা টাকা ‘নজরানা’ দিতে হচ্ছে। টাকা না দিলে নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এ নিয়ে শেষমেশ ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে সরব হতেই নড়েচড়ে বসেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা।
মঙ্গলাহাট কার্যত বসে যায় রবিবার থেকেই। চলে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত। এই হাটের সঙ্গে প্রায় ৭০ হাজার ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবার যুক্ত থাকায় শহরের মাঝখান থেকে হাট সরানোর ব্যাপারে কোনও রাজনৈতিক দলই পদক্ষেপ করেনি। বছর তিনেক আগে হাওড়ার প্রশাসনিক সভায় এসে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাট অন্যত্র সরানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ দিকে, এ দিন হাওড়া থানার কাজকর্ম নিয়ে তদন্তের বিষয়ে নগরপাল বলেন, ‘‘কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে না। থানার কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এটা রুটিন কাজ। এর সঙ্গে মঙ্গলাহাটের তোলাবাজির কোনও যোগ নেই। তবে, কাজে গাফিলতি ও অবহেলার জন্য এক কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ় করা হয়েছে। এর বাইরে কিছু হয়নি।’’