চেয়ারম্যানের দোতলা বাড়ি। নিজস্ব ছবি।
গ্রামীণ এলাকায় গরিবদের পাকা বাড়ি তৈরির লক্ষ্যে ‘আবাস প্লাস’ প্রকল্পে দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছে রাজ্য জুড়ে। যা নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। সেই আবহে এ বার পুর এলাকার আবাস প্রকল্প ‘সকলের জন্য বাড়ি’ (হাউস ফর অল)-তেও ‘অনিয়ম’! অভিযোগ, পাকা বাড়ি এবং কোটি টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও পুরসভার চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও দুই ভাইয়ের নাম রয়েছে উপভোক্তাদের তালিকায়। অথচ, বাদ গিয়েছে প্রকৃত গরিব মানুষের নাম। যা বিতর্ক তৈরি হয়েছে হুগলির আরামবাগে।
প্রশ্নের মুখে পড়া তৃণমূলের আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভাণ্ডারির অবশ্য দাবি, ‘‘আমার নাম এসেছে শুধু। বাড়ি তো নিইনি।’’ সম্প্রতি উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপিও। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পেও ‘দুর্নীতি আর স্বজনপোষণ’ হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি দোতলা পাকা বাড়িতে সপরিবার থাকেন চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও তাঁর আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পুরভোটের সময় হলফনামায় সমীর জানিয়েছিলেন, তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। তার পরেও শহরের আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকায় চেয়ারম্যানের স্ত্রী উত্তরা ভাণ্ডারি এবং দুই ভাই বিশ্বজিৎ ও প্রবীর ভাণ্ডারি নাম রয়েছে। অভিযোগ, এ দিকে ঝুপড়ি বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও বহু গরিব মানুষের নাম বাদ পড়েছে তালিকা থেকে। সদ্য প্রকাশিত তালিকা দেখে অবাক পুরসভার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা। তাঁদের একজনের কথায়, ‘‘আমরা ঘর পাওয়ার উপযুক্ত। অথচ, আমাদেরই বাদ দেওয়া হল!’’ হুগলির পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘হাউস ফর অল প্রকল্প গরিব মানুষের জন্য। আরামবাগের চেয়ারম্যানের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম রয়েছে। তৃণমূল নেতারা সরকারি প্রকল্প নিজেদের মধ্যে কুক্ষিগত করে রাখছেন।’’
এ প্রসঙ্গে হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’