পুরনো বাড়ির চারপাশে তোলা হয়েছে পিলার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ('সকলের জন্য বাড়ি') প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা বেনিয়মে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বৈদ্যবাটী পুরসভা ও স্থানীয় পুর-প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়েই পুর-কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ইঞ্জিনিয়ার পাঠায় বাড়িটি খতিয়ে দেখতে। পরে পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, যদি সত্যিই বেনিয়মের অভিযোগ আসে, তাহলে উপভোক্তাকে নোটিস পাঠিয়ে সব টাকা ফেরত নেওয়া হবে।
বৈদ্যবাটীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতুলতলা ধানমাঠের ঘটনা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ির মালিক শেফালি ভঞ্জ নামে এক মহিলা। তাঁর নিজের জায়গায় অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া পাকা বাড়ি ছিল। ঢালাই ছাদ না থাকায় তিনি ‘সকলের জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের যোগ্য। নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে বাড়ির ছবি তোলা হয়। পরে ওই বাড়ি ভেঙে ফাঁকা জায়গার স্যাটেলাইট লোকেশন করার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি বলে অভিযোগ। তার বদলে ওই মহিলা ওই বাড়ির পাশের ফাঁকা জমির ছবি তোলান বলে অভিযোগ। এরপরে ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে দু’কিস্তির টাকা চলে আসে।
বিপত্তি হয় তৃতীয় কিস্তির ক্ষেত্রে। গত মঙ্গলবার স্থানীয় পুর-প্রতিনিধির সুপারিশে ওই উপভোক্তার তৃতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার আগে পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা বাড়ির ছবি তুলতে গিয়ে দেখেন, পুরনো বাড়ির চারধারে পিলার করা হয়েছে। আর যে জমি দেখে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেই জমি ওই মহিলার নয়ই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই কাজের সঙ্গে স্থানীয় পুর-সদস্য ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের যোগসাজশ রয়েছে। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘দাগ ও খতিয়ান নম্বর মেলানো হল না কেন?’’
অভিযোগ মানতে নারাজ ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফরওয়ার্ড ব্লকের পুর-প্রতিনিধি রত্না দাস। তাঁর কথায়, ‘‘ওয়ার্ডে প্রায় ২০০ বাড়ি হচ্ছে। প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে কী হচ্ছে দেখে আসা সম্ভব নয়। ছবি তোলেন প্রকল্পের নির্মাণ সহায়করা। কী হয়েছে পুরসভা বলতে পারবে।’’ বৈদ্যবাটীর পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘পুরনো বাড়ি না ভেঙে শুধুমাত্র কংক্রিটের পিলারগুলো তৈরি করা হয়েছে। যেটা এই প্রকল্পের নির্মাণের ক্ষেত্রে ঠিক নয়। কেন এমন ভুল হল, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ বেনিয়মে টাকা পেলে তা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কড়া নির্দেশের কথাও জানান তিনি।
ওই বাড়ির মালিক শেফালি ভঞ্জের ছেলে সঞ্জয় বলেন, ‘‘অর্থ সাশ্রয়ের জন্য বাড়ির দেওয়াল ভাঙা হয়নি। ভুল হয়েছে। প্রয়োজনে পুরসভার টাকা ফিরিয়ে দেব।’’