হাওড়ায় উদ্ধার হয়েছে সাপ দু’টি। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির সামনের জায়গা পরিষ্কার করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠল তরুণের। জড়ো করা ইট সরাতে গিয়ে ধবধবে সাদা রঙের দু’টি সাপ দেখে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হল হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকার বাসিন্দা শুভাশিস মণ্ডলের। কিছু ক্ষণের মধ্যে সাপ জোড়াকে দেখতে হইচই শুরু করলেন প্রতিবেশীরা। প্রত্যেকেই বলাবলি করছেন, এমন সাপ কেউ আগে দেখেননি। শেষে পরিবেশকর্মীরা এসে সাপ দু’টিকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে।
হাওড়ার শ্যামপুর থানার দু’নম্বর ব্লকের ডিহিমণ্ডল ঘাট এলাকার সাঁইবেড়িয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া সাপ দু’টি বিরল অ্যালবিনো কুকরি। বাংলায় ‘উদয়কাল সাপ’ বলা হয়। বস্তুত, জার্মানির জাকব এবং ভিলহেল্ম গ্রিম ভ্রাতৃদ্বয়ের রূপকথায় যে ‘সাদা সাপ’-এর কথা বলা হয়েছিল, সেই রকম সাপের দেখা পাওয়া গেল হাওড়ায়। সাঁইবেড়িয়া গ্রামের কলেজছাত্র শুভাশিস জানিয়েছেন, বাড়ির সামনে মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। ইট সরানোর সময় তিনি ওই দু’টি সাপ দেখতে পান। এলাকায় হইচই শুরু হয়ে যায়। শুভাশিস অবশ্য দেরি না করে তাঁর শিক্ষক অয়ন বরকে ঘটনাটি জানান। সেখান থেকে খবর যায় ‘ওয়াইল্ড লাইফ অফ শ্যামপুর’ গ্রুপের সদস্য তথা পরিবেশকর্মী অভীক মাইতির কাছে। অভীক জানান, যে দু’টি সাপ উদ্ধার হয়েছে, তাদের একটি উদয়কাল সাপ বা ‘কমন কুকরি’। একটি উদয়কাল সাপ স্বাভাবিক রঙের হলেও আর একটি যে উদয়কাল সাপ পাওয়া গিয়েছে, সেটি সাদা রঙের। অর্থাৎ, সেটি ‘অ্যালবিনো কুকরি’। সাপ দু’টিকে উদ্ধারের পর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিক বলেন, ‘‘উদয়কাল একটি নির্বিষ সাপ। উদয়কাল সাপ বিরল না হলেও অ্যালবিনো উদয়কাল বা ‘কুকরি সাপ’ কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না। ‘অ্যালবিনিশম্’ একটি জেনেটিক মিউটেশন। প্রাণিজগতে ‘অ্যালবিনিশিম্’ বা পিগমেন্টেশনের অভাবে এদের ত্বকের রং ফ্যাকাশে বা সাদা হয়ে যায়। লিউশিজিমের জন্য চোখের রং কালো থাকলেও অ্যালবিনোর চোখের রং লাল হয়।’’