নিজস্ব চিত্র
গত বছর আমপানের পর এ বার ইয়াস, ফি বছর যেন নিয়ম করে ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। আর যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলোকে। সমুদ্রের নোনাজল ঢুকে বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি নষ্ট করে দিচ্ছে। এ বার ইয়াসের প্রভাবে বহু জমিতে নোনাজল ঢুকে নষ্ট হয়েছে জমি। নোনাজল জমে থাকায় বর্ষার ধান চাষ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে কৃষি দফতর।
চুঁচুড়ার ধান গবেষণা কেন্দ্রে এই উন্নত প্রজাতির ধান আবিষ্কার করা হয়। পরে নাম দেওয়া হয় ‘গোসাবা-৫’, ‘গোসাবা-৬’। সুন্দরবনের গোসাবা উপ গবেষণাকেন্দ্রে এই ধানের পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। চুঁচুড়া ধান গবেষণাকেন্দ্রের যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা পার্থ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছর মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুন্দরবন এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। যেখানে মূল চাষ হল ধান। সেই কারণে নোনাজলে প্লাবিত জমিতে চাষ করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতি লবণাক্ত জমিতে ভাল ফলন দেয় এ রকম ধান গবেষণা করে আবিষ্কার করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘চুঁচুড়া নোনা-১’, ‘চুঁচুড়া নোনা-২’। পরবর্তী কালে গোসাবা উপকেন্দ্র থেকে এই ধান ‘গোসাবা-৫’, ‘গোসাবা-৬’ নামে পরিচিত হয়। এই প্রজাতির ধান সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ছাড়পত্র পায়। এর আগে লবণাক্ত জমিতে জারাভা, লুনা সম্পদ, লুনা শ্রী, দুধেশ্বর প্রজাতির ধান চাষ হত। এখনও অনেকে চাষ করেন। তবে গোসাবা প্রজাতির ধানের ফলন অনেক বেশি। প্রতি হেক্টরে পাঁচ টন মত উৎপাদন হয়।’’
গোসাবা প্রজাতির ধান চাষ করার ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম চাষিদের মানতে হবে বলে জানিয়েছেন পার্থ। তিনি জানান, প্রথম কাজ হবে লবণ জল জমি থেকে বের করা, দ্বিতীয়ত জৈব সার প্রয়োগ করা, মাটি পরীক্ষা করা ও বেশি বয়সের চারা রোপণ করা।
সরকারি কৃষি খামারে গোসাবার বীজ তৈরি হচ্ছে। তবে তার পরিমাণ যথেষ্ট নয়। কয়েকজন কৃষককে দিয়েও বীজ করানো হচ্ছে। চলতি বছরে না হলেও আগামী বোরো মরসুমে এই বীজ কৃষকদের মধ্যে যা বিলি করা যাবে বলে মনে করছে কৃষি দফতর।