রেশন ডিলারদের বিক্ষোভ আরামবাগ খাদ্য দফতরের অফিসের সামনে। বৃহস্পতিবার। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু করছে রাজ্য সরকার। হুগলিতে পরীক্ষামূলক ভাবে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রকল্পটি চালু হওয়ার কথা। কিন্তু এ জন্য যে পরিকাঠামো এবং পরিকল্পনার প্রয়োজন, তা নেই বলে দাবি রেশন ডিলারদের। এই অবস্থায় প্রকল্পটি চালু করা যাবে কি না, তা নিয়ে তাঁরা সংশয় প্রকাশ করেছেন।
কোথায় সমস্যা?
ডিলাররা মনে করছেন, গ্রাহকের দুয়ারে গিয়ে রেশন দেওয়ার মতো এখনও সব জায়গায় রাস্তাঘাট নেই। সে সব ক্ষেত্রে মাথায় করে চাল-গমের বস্তা বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। গ্রাহকের আঙুলের ছাপ নিয়ে মাল দেওয়া বাধ্যতামূলক হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ই-পস যন্ত্রে (ইলেকট্রিক পয়েন্ট অব সেলিং) সেই কাজ করতে গিয়ে অনেক জায়গায় নেটওয়ার্ক না-ও মিলতে পারে। কারও বাড়িতে রেশন দিতে গিয়ে যদি দেখা যায়, কোনও এক গ্রাহক নেই, তাঁর মাল কী ভাবে ফিরিয়ে আনা হবে, সে প্রশ্ন রয়েছে।
এ ছাড়াও, ডিলারদের ক্ষোভ, সকাল সাড়ে ৬টা থেকে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। অথচ, টিফিন বা দুপুরে খাবারের খরচ, শ্রমিকদের মজুরি, গাড়ি থাকলে তার খরচ বা চালকের মজুরি কোথা থেকে আসবে তা বলা হয়নি। চাল-গমের বস্তা রাস্তায় লুট হলে বা ঝড়বৃষ্টিতে নষ্ট হলে কী হবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে বলা নেই খসড়া নির্দেশিকায়। কমিশন বাড়ানোর আশ্বাস থাকলেও তার পরিমাণও জানানো হয়নি। এ সব চূড়ান্ত না-হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালু করা যাবে না বলে মনে করছেন বহু ডিলার।
বৃহস্পতিবারই আরামবাগ মহকুমা খাদ্য দফতরে এ সব নিয়ে একপ্রস্ত বিক্ষোভ দেখায় মহকুমার ডিলার সংগঠন। স্মারকলিপিও দেয়। সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, তাঁরা কুইন্টালপ্রতি ৭৫ টাকা করে যে কমিশন পান, তা গত জানুয়ারি মাস থেকে বকেয়া রয়ে গিয়েছে।
জেলা রেশন ডিলার সংগঠনের সভাপতি অভিজিৎ রায় বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়ন করা নিয়ে সবাই আমরা একমত। কিন্তু তাতে যে সব সমস্যা উঠে আসছে, তাকী করে কাটবে, তা নিয়ে আমরা ধোঁয়াশায় রয়েছি। যদি সব খরচ আমাদের কমিশনের উপর নির্ভর করে তা হলে সেটা কত বাড়ানো হবে সেটা আগাম জানা দরকার।’’
এ দিনই অবশ্য রেশন ডিলারদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ শুরু হবে। যা যা সমস্যা উঠে আসবে, সেই মতো সমাধান করা হবে।