দ্বারকেশ্বরের জলে ভাসছে মাছ। —নিজস্ব চিত্র।
বিষ প্রয়োগ করে আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন নদ-নদী এবং খালে মাছ ধরার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বর্ষার মাস কয়েক সেই অভিযোগ সে ভাবে শোনা যায়নি। কিন্তু পুজো পর থেকে সেই অভিযোগ ফের সামনে আসছে। বুধবার সকালে আরামবাগের চাঁদুর সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদের প্রায় এক কিমি এলাকা জুড়ে মরা মাছ ভাসতে দেখে স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা সরব হলেন।
পরিবেশকর্মীদের মধ্যে আব্দুল রশিদ, ভূপেন মালিক প্রমুখের অভিযোগ, আইন থাকা সত্ত্বেও মৎস্য দফতর নদ-নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করছে না। বিপন্ন হচ্ছে মাছ-সহ নানা জলজ জীব। সর্বোপরি, জল দূষিত হয়ে বিপন্ন হচ্ছে জনস্বাস্থ্য। অতীতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় একই রকম বিষ দিয়ে মাছ ধরার ঘটনা বার পাঁচ ঘটেছে জানিয়ে আব্দুল রশিদ বলেন, “বিষয়টা মৎস্য দফতরের জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি।”
জেলা মৎস্য দফতরের একটি সূত্রের খবর, এখানে বিষ দিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা ঠেকাতে প্রচুর লোকবল দরকার। সেটা না থাকায় যথাযথ নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় প্রশাসন ও মানুষের সহযোগিতা ছাড়া এটা আটকানো দূরূহ। জলাশয়ে বিষ বা ওই জাতীয় কিছু ব্যবহার করলে ছ’মাস জেল বা দু’হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। দু’টি শাস্তি একসঙ্গেও চলতে পারে।
জেলার সহ-মৎস্য অধিকর্তা সুব্রত সরকার বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী জলাশয়ে বিষ দিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। আইনবিরুদ্ধ এই কাজের নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। বিষ প্রয়োগের ক্ষয়ক্ষতির দিকগুলি জানিয়ে বছরভর সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলে।”
শুধু দ্বারকেশ্বর বা চাঁদুরেই নয়, মহকুমায় দামোদর নদ, মুণ্ডেশ্বরী নদী এবং খাল-বিলগুলিতেও একই ভাবে মাছ ধরার ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ।