আইপিএস অফিসারের মায়ের নাম আবার লেখা হল অ্যাম্বুল্যান্সে। নিজস্ব চিত্র।
আনন্দবাজার অনলাইনের খবরের জের। বিতর্ক তৈরি হতেই তড়িঘড়ি অ্যাম্বুল্যান্সের গায়ে আইপিএস অফিসারের মায়ের নাম ও ক্লাবের নাম লিখলেন উত্তরপাড়া তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের সাফাই, নাম মুছে ফেলা হয়নি, বিশেষ কারণে তাড়াহুড়ো করে উদ্বোধন করা হয় অ্যাম্বুল্যান্সটি। আরও কিছু কাজ বাকি ছিল সেটির। তাই এই গণ্ডগোল।
সোমবারই আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছিল খবরটি। হুগলির উত্তরপাড়ায় একটি স্থানীয় ক্লাব অ্যাম্বুল্যান্স কিনবে বলে মায়ের স্মৃতির উদ্দেশে এক লক্ষ টাকা দান করেছিলেন এক আইপিএস অফিসার। অ্যাম্বুল্যান্স কেনার পর গাড়ির গায়ে অফিসারের মায়ের নামও লেখা ছিল। কিন্তু হঠাৎই মুছে দেওয়া হয়েছিল ওই আইপিএস অফিসারের মা শান্তি মিশ্রের নাম। অ্যাম্বুল্যান্সের গায়ে খোদাই করে দেওয়া হয় ‘তৃণমূল যুব কংগ্রেস ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ’। নারকেল ফাটিয়ে সেই অ্যাম্বুল্যান্স পুনরায় উদ্বোধন করেছিলেন হুগলির সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরই শুরু হয়ে বিতর্ক।
এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ক্ষুণ্ণ হয়েছিল আইপিএসের পরিবারও। শাসকদলের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল এই নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই। তারা দাবি করেছিল, উত্তরপাড়ার ‘মাখলা সেবক সংঘ’ ক্লাব অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাতে পারছিল না বলেই তাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
উত্তরপাড়া শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি শুভদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মা মাটি মানুষের দল করি। তৃণমূল দল গরিবের দল তাই নতুন অ্যাম্বুল্যান্স কেনার পয়সা নেই। মাখলার ক্লাব আমাদের কাজ দেখে অ্যাম্বুল্যান্স আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। উদ্বোধনের দিন আমরা বারবার মাইকে ঘোষণা করেছি। শান্তি মিশ্রর স্মৃতিতে মাখলা সেবক সংঘ ক্লাবের এই অ্যাম্বুল্যান্স আমরাই চালাব। খুব কম খরচে সাধারণ মানুষ পরিষেবা পাবেন।”
মাখলার বাসিন্দা ওই আইপিএস অফিসার কর্মসূত্রে বর্তমানে অসমে রয়েছেন। ২০১৮ সালে সেবক সংঘ ক্লাব যখন অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়া শুরু করে তখন মা শান্ত মিশ্রের স্মৃতিতে ওই ক্লাবকে এক লক্ষ টাকা দান করেছিলেন আইপিএস।
সেবক সংঘ ক্লাবের সদস্য সৌরভ দাস বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম অ্যাম্বুল্যান্সটা পড়ে পড়ে যেন নষ্ট না হয়। তাই তৃণমূল ছাত্র যুবদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। আইপিএস আনন্দ মিশ্রের মায়ের নাম মুছে ফেলা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁর নাম যাতে সব জায়গায় প্রচার হয় এবং সাধারণ মানুষ পরিষেবা পায় সেটাই আমরা চেয়েছি।”
ওই আইপিএস অফিসারের পরিবার হঠাৎ জানতে পারেন সেই অ্যাম্বুল্যান্সটি শনিবার নতুন করে উদ্বোধন করেছেন সাংসদ। সেই সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সের গায়ে শান্তি মিশ্র এবং ক্লাবের নাম তুলে দিয়ে লেখা হয়েছে ‘উত্তরপাড়া শহর তৃণমূল ছাত্র ও যুব কংগ্রেস’। এর পরেই শুরু হয় বিতর্ক।