খানাকুলের ঘোষপুরে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়।
সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যে তৃণমূল নানা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জনসংযোগ বাড়াতে প্রায় বছর দশেক পর মঙ্গলবার সকালে ফের লাল ঝান্ডা উড়ল খানাকুলের ঘোষপুরের বাম কার্যালয়ে। এ দিন কার্যালয়ের দরজা খোলার পর স্থানীয় কৌঘষা থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত সিপিএমের খেতমজুর সংগঠনের মিছিলে হাঁটলেন শ’খানেক দলীয় কর্মী-সমর্থক। দলের নেতা তথা জেলা কমিটির সদস্য ভজহরি ভুঁইয়া বলেন, “লাল পতাকাই যে একমাত্র ভরসার জায়গা, মানুষ তা বুঝেছেন। তাঁদের সমর্থনেই দলীয় কার্যালয় খোলা হল।”
স্থানীয় বাম নেতৃত্ব জানান, ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর এই কার্যালয়ের দখল নিয়েছিল তৃণমূল। ২০২১ সালে তৃণমূলের থেকে কার্যালয়ের চাবি নিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। সেই সময় বাম নেতারা স্থানীয় বিজেপি নেতাদের থেকে কার্যালয়ের চাবি ফেরত চান। তা দিয়ে দেওয়া হয়। বাম নেতৃত্বের দাবি, এক বছর ধরে বেহাল ওই কার্যালয় সংস্কার করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগ বাড়াতেই এই কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুধু খানাকুলের এই কার্যালয় নয়। পালাবাদলের পর আরামবাগ মহকুমার গোঘাটের দু’টি ব্লক, আরামবাগ এবং পুরশুড়ায় বামেদের অঞ্চল এবং গ্রামের কার্যালয়গুলির অধিকাংশই দখল, লুট বা ভাঙচুর হয়ে গিয়েছিল। যেগুলি দখল হয়নি, সেগুলিতে কেউ ভয়ে যেতেন না। ২০১৯ সাল নাগাদ লোকসভা ভোটের সময় বিজেপির প্রভাব বাড়ে। সেই সময় তৃণমূলের দখলে থাকা বেশ কিছু কার্যালয় বিজেপি দখল করে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বিজেপির আতঙ্কে বামেদের বেশ কিছু দলীয় কার্যালয় তৃণমূল নিজেরাই দখলমুক্ত করে সরে পরে।
দলীয় কার্যালয় দখল এবং ভাঙচুরের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি পলাশ রায় বলেন, “আমাদের তরফে কোথাও দখল বা ভাঙচুর হয়নি। ৩৪ বছরের অত্যাচারের পরিণাম আঁচ করে বামেরাই নিজেদের কার্যালয়ে তা লা মেরে পালায়।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, “বিজেপির তরফে অন্যের দলীয় কার্যালয় দখলের কোনও প্রশ্নই নেই। গত লোকসভা ভোট থেকেই আমাদের মোকাবিলা করতে সিপিএমকে ডেকে এনে দলীয় কার্যালয় খোলাচ্ছে তৃণমূল। কিন্তু এতে কিছুই লাভ হবে না।”