জাতীয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া স্টেশনের বিপরীতে চাঁদমারি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় যে সব হোটেল রয়েছে, তাদের কঠিন ও তরল অপরিশোধিত বর্জ্য গঙ্গায় মিশছে। ফলে গঙ্গার দূষণ বাড়ছে। এই মর্মে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই পরিবেশ আদালত হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অবস্থান জানতে চেয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৮ জানুয়ারি।
হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে চলা হোটেলগুলি উচ্ছেদ করতে গেলে এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই আগে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন দরকার। এ জন্য পুলিশের তরফে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষের (কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যার ভিত্তিতে ২২ ডিসেম্বর বন্দর ও পুলিশ যৌথ ভাবে এলাকা পরিদর্শন করে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয় বৈঠকও হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গঙ্গাসাগার মেলার পরে সব পক্ষকে নিয়ে আর একটি বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে উচ্ছেদ অভিযানের দিন নির্ধারণ হবে।
ঘটনাপ্রবাহ জানাচ্ছে, ২০০৭ সালে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ চাঁদমারি ঘাটে ন’টি দোকানকে চিহ্নিত করেছিল, যাদের মাধ্যমে গঙ্গা দূষিত হয়। নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী ছ’মাসের মধ্যে সেই দোকানগুলিকে স্থানান্তর করার। এই নির্দেশের পরে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের জমি থেকে বেআইনি দখলদার সরানোর জন্য হাওড়া পুলিশকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছিল। হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের বক্তব্য, সেই সব চিঠি গোলাবাড়ি থানার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যার ভিত্তিতে গোলাবাড়ি থানা রিপোর্ট জমা করে।
রিপোর্টে বলা হয়, চাঁদমারি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১২টি দোকান রয়েছে। সেগুলি গত পঞ্চাশ বছর
ধরে রয়েছে। পুলিশ আরও জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষ চিঠি দিলেও তারা এলাকায় যৌথ পরিদর্শন করেনি বা নিজেরাও কোনও ‘অ্যাসেসমেন্ট’ করেনি। ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে আগে পরিস্থিতির পর্যালোচনা গুরুত্বপূর্ণ। হঠাৎ করে উচ্ছেদ অভিযান চালালে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। সে কারণেই যৌথ পরিদর্শন ও সমন্বয় বৈঠকের দরকার ছিল। পরবর্তী পদক্ষেপ আগামী বৈঠকের পরেই হবে।
মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘হোটেল থেকে সরাসরি বর্জ্য গঙ্গায় গিয়ে মিশছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরেও রাজ্য বা কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থারই হেলদোল নেই। শুধু বছর ঘুরছে।’’